গল্প - মনোজ কর
Posted in গল্প
নবম পর্ব
ব্রিটিশশক্তির দুই উপাদান- গুপ্তচর এবং বিশ্বাসঘাতক
পলাশির যুদ্ধে গুপ্তচরেরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। অন্যায় এবং নীতিহীন পদ্ধতিতে সংবাদ সংগ্রহ করে ব্রিটিশদের কাছে পৌঁছে দেওয়া ছিল রাজপ্রাসাদের অভ্যন্তরের বিশ্বাসঘাতকদের অর্থ উপার্জনের একটা বড় রাস্তা। এদের খবরের উপর ভিত্তি করেই ক্লাইভ ঠিক সময়ে অ্যাডমিরাল ওয়াটসন এবং কলকাতা কাউন্সিলের কাছে যুদ্ধ শুরুর আবেদন জানায়। কোম্পানি এই গুপ্তচরদের প্রভূত পরিমাণে আর্থিক সাহায্য করে একেবারে নিজেদের তাঁবেদার বানিয়ে তুলেছিল। এই গুপ্তচরেরা সাংকেতিক ভাষা তৈরি এবং ব্যবহারে পারদর্শী ছিল। বিশেষ করে সংখ্যাকে শব্দ এবং শব্দকে সংখ্যা দিয়ে লেখার বেশ চল ছিল এই সাংকেতিক ভাষাগুলিতে। উদাহরণ হিসাবে a’র জায়গায় 19, বা b’র জায়গায় 15 ইত্যাদি। আবার কিছু কিছু ক্যাপিটাল লেটার দিয়ে কোনও বিশেষ ব্যক্তি বা জায়গা বোঝানো হত। যেমন A মানে ওয়াটস, D মানে মীরজাফর ইত্যাদি।
১৭৫৭ সালের আগস্ট মাসে ক্লাইভ নিজে লন্ডনের কোর্টে লিখছে যে তার হাতে সিরাজের লেখা কিছু চিঠি এসেছে যে চিঠিগুলো ফরাসিদের লেখা হয়েছিল। এই চিঠিগুলোর অনুবাদ পড়লে এ কথা বোঝা অনেক সহজ হয়ে যাবে যে কেন সিরাজকে অবিলম্বে সিংহাসনচ্যুত করা দরকার। রেভারেন্ড লং পন্ডিচেরির কমান্ডার চার্লস জোসেফ দ্য বাসসি কে লেখা সিরাজের বেশ কিছু চিঠি অনুবাদ করেছিল। এই চিঠিগুলোর সময়কাল ১৭৫৭’র ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি অর্থাৎ ব্রিটিশদের সঙ্গে আলিনগর চুক্তি স্বাক্ষরিত হবার কয়েকদিন পরেই যখন ক্লাইভ চন্দননগর আক্রমণের প্রস্তাব পেশ করেছে এবং সে বিষয়ে ওপরওয়ালাদের সঙ্গে মতবিনিময় চলছে। চিঠিটি এইরকম,
‘সর্বমহান আধিকারিক এবং মহিমান্বিত বন্ধুবর মঁসিয়ে বাসসি,
আপনি হয়ত অবগত আছেন যে উপদ্রবসৃষ্টিকারী ব্রিটিশ অ্যাডমিরাল এবং কর্নেল ক্লাইভ বিনা কারণে চন্দননগরের গভর্নর মঁসিয়ে রেনোঁর বিরুদ্ধে আক্রমণ চালিয়েছে। আমি যেহেতু মানবসমাজের মঙ্গলকামনায় আত্মনিবেদন করেছি সেই হেতু আমার সৈন্যবাহিনী পাঠিয়ে মঁসিয়ে রেনোঁর পাশে দাঁড়াতে মনস্থ করেছি। ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে তিনি আমার পাঠানো সৈন্যদের নিয়োগ করতে পারেন। প্রয়োজনে আমি নিজে গিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়াব। ইংরেজরা যারা বিনা কারণে উপদ্রব সৃষ্টি করছে নিশ্চয়ই যথোপযুক্ত শাস্তি পাবে। আমার সৈন্যবাহিনীকে নিজের সৈন্যবাহিনী বলে মনে করবেন। আশা করি আমি যে দু’হাজার সৈন্যের জন্য আমি আপনার কাছে অনুরোধ করেছিলাম আপনি তা অবশ্যই পাঠিয়েছেন। যদি এখনও না পাঠিয়ে থাকেন তবে সত্বর পাঠাবার ব্যবস্থা করলে বাধিত হব। মঁসিয়ে রেনোঁ আপনাকে বিস্তারিত ভাবে সবকিছু জানাবেন। আপনার স্বাস্থ্যের সংবাদ জানার জন্য উদগ্রীব থাকব। ‘
দ্বিতীয় চিঠির সময়কাল মার্চের মাঝামাঝি যখন মঁসিয়ে বাসসি চন্দননগরকে ব্রিটিশদের হাত থেকে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে চন্দননগরের দিকে আসছে। দুর্ভাগ্যবশত, অনেক দেরি হয়ে গেছে । ১৪ই মার্চ যখন এই চিঠি লেখা হয় তখন ফরাসিদের সঙ্গে ক্লাইভের বাহিনীর যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে এবং ২৩শে মার্চ চন্দননগরের ফরাসিরা ক্লাইভের কাছে আত্মসমর্পণ করে। চিঠিতে সিরাজ চন্দননগরকে রক্ষার উদ্দেশ্যে মঁসিয়ে বাসসির উড়িষ্যা উপকূলে পৌছনোর খবরের প্রাপ্তিস্বীকার করে জানায় যে সে বন্ধুত্ব সুদৃঢ় করার উদ্দেশ্যে মঁসিয়ে বাসসির সঙ্গে দেখা করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। সিরাজ একথাও জানায় যে নিকটবর্তী নায়েব, সুবেদার এবং ফৌজদারদের জানানো হয়েছে তারা যেন মঁসিয়ে বাসসির জন্য সবরকম সহযোগিতার ব্যবস্থা করে।
মার্চের শেষে লেখা তৃতীয় চিঠিটি এইরকম।
আমি অবগত হয়েছি যে আপনি উড়িষ্যা উপকূলে ইছাপুরে এসে পৌঁছেছেন। এই সংবাদে আমি অতিশয় আনন্দিত। আমি আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। ব্রিটিশদের অন্যায় সম্বন্ধে আর কী বলবো? বিনাকারণে তারা মঁসিয়ে রেনোঁর সঙ্গে গন্ডগোল করে কারখানা দখল করে নিয়েছে। ওরা এখন মঁসিয়ে ল’র সঙ্গে গন্ডগোল পাকাতে চাইছে। কিন্তু আমি তা হতে দেব না। আমি আমার সমস্ত শক্তি নিয়ে এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াব। যখন আপনি বালাসোরে এসে পৌঁছবেন আপনার আপত্তি না থাকলে তখন আমি মঁসিয়ে লকে আপনার কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করব। শুভেচ্ছাসহ।
জিন লয়ের মতানুসারে বাংলায় ব্রিটিশদের সঙ্গে ফরাসিদের যুদ্ধের মূল কারণ সাতবছরব্যাপী ইউরোপের যুদ্ধ। এই যুদ্ধের সংবাদ বাংলায় পৌঁছোয় ১৭৫৭ সালের জানুয়ারি মাসে ব্রিটিশদের কলকাতা পুনর্দখলের অব্যবহিত পরেই। এছাড়াও মঁসিয়ে রেনোঁ সিরাজের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবার জন্য অধীর হয়ে পড়েছিল। লয়ের মতে ওয়াটসন এবং ক্লাইভ সিরাজের দরবারে লয়ের গতিবিধির ব্যাপারে বেশি আগ্রহী ছিল। তাদের ধারণা ছিল যে ফরাসিরা সিরাজের দরবারের সকলকে উপঢৌকন দিয়ে হাত করে ফেলেছে। কিন্তু সত্য এটাই যে সিরাজের দরবারে সিরাজ ছাড়া আর সকলেই ব্রিটিশদের পক্ষে ছিল।
জিনস ল তার স্মৃতিচারণায় বলেছে যে সিরাজকে গদিচ্যুত করা ব্রিটিশদের জন্য অপরিহার্য ছিল। ফরাসিদের বাংলা থেকে বিতাড়িত করা ছিল তার প্রথম পদক্ষেপ। সিরাজ এবং অতিরিক্ত সৈন্যসহযোগে ফরাসিরা একত্রে হয়ত বাধার সৃষ্টি করতে পারত। ব্রিটিশরা চেয়েছিল যেই নবাবের আসনে বসুক না কেন সে যেন ব্রিটিশদের স্বার্থরক্ষা করে। ফরাসিদের পক্ষে খুব একটা বেশি কিছু করা সম্ভব ছিল না। বিশেষকরে চন্দননগর দখল হয়ে যাবার পর ফরাসিরা অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। ব্রিটিশদের সঙ্গে সিরাজের নিজের দরবারের সিরাজবিরোধী শক্তিরা হাত মেলানোর ফলে ব্রিটিশদের শক্তি বহুগুনে বেড়ে যায়। অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও ফরাসিরা রাই দুর্লভ এবং জগতশেঠের সমর্থন আদায় করতে পারেনি। কলকাতার ঘটনার পর কেউই ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে দাঁড়াবার সাহস পাচ্ছিল না। লয়ের মতে জগতশেঠ মাধবরাই এবং তার ভাই স্বরূপচাঁদ সিরাজের বিরুদ্ধে নানারকম চক্রান্তে লিপ্ত ছিল। সিরাজের সামনে তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নানারকম কুমন্তব্য করে সিরিজকে উত্তেজিত করত। এর পিছনে দুটো উদ্দেশ্য ছিল। প্রথমত সিরাজের আস্থা অর্জন করা এবং দ্বিতীয়ত সিরাজকে বিপথে চালনা করা। অল্পবয়সী সিরাজ উত্তেজনার বশে ক্রোধান্ধ হয়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তার সমস্ত পরিকল্পনা চিৎকার করে সবার সামনে বলে ফেলত।এতে ব্রিটিশদের পক্ষে সাবধানতা অবলম্বন করা অনেক সুবিধাজনক হয়ে যেত। তাছাড়াও জগতশেঠের সাহায্যে মীরজাফর এবং অন্যান্য মহামান্য ব্যক্তিদের নিজেদের দিকে টেনে নিতে পেরেছিল ব্রিটিশেরা। আলিবর্দির মন্ত্রীসভার সদস্যরা যারা সিরাজের হাতে অপমানিত হয়েছিল তারাও এই সুযোগে প্রতিশোধস্পৃহায় ব্রিটিশদের পক্ষ নিল।
জিনস ল’ এর কথা অনুযায়ী যে সিরাজের যে চিঠির উপর ভিত্তি করে অ্যাডমিরাল ওয়াটসন চন্দননগর আক্রমণ করেছিল সেই চিঠির বয়ান তৈরির পিছনে ব্রিটিশদের হাত ছিল। এই চিঠির রচয়িতাকে ব্রিটিশরা উৎকোচ প্রদান করেছিল এবং চিঠির বয়ান এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে চিঠির ব্যাখ্যা অন্যরকমভাবে করার সুযোগ থাকে। সিরাজ বিশ্বাস করত যে চিঠি তার নির্দেশ অনুযায়ী লেখা হবে এবং সেই চিঠি পড়ার কোনও প্রয়োজন নেই। । তার চেয়েও বড় কথা যে মুসলমান নবাবেরা চিঠিতে তাদের নাম সই করত না। নবাবের সামনে সেই চিঠিতে সিলমোহর লাগানো হত এবং সেই চিঠি খামবন্দি করে শক্ত করে আটকে দেওয়া হত। অনেকে মনে করে সই না করার পিছনে নবাবদের অন্য উদ্দেশ্য থাকত। কোনও কারণে বিতর্ক সৃষ্টি হলে নবাবরা এই ভাবে পত্রলেখকদের উপর নির্দেশ না মানার বা না বোঝার দোষ চাপিয়ে দেবার রাস্তা খোলা রাখত।
কেবলমাত্র কর্মচারিরা নয় নবাবের হারেমের খোজারা পর্যন্ত সিরাজের প্রতি বিরক্ত ছিল এবং তার বিরুদ্ধে চক্রান্তে অংশ নিয়েছিল। সিরাজের বিরুদ্ধে এই সর্বব্যাপী চক্রান্তের মূল রূপকার ছিল জগতশেঠ। জগতশেঠ সিরাজের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ব্রিটিশদের সবরকম ভাবে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। জিনস ল সিরাজের দরবারের সকলকে এতটাই প্রভাবিত করেছিল যে নবাবের সেনাবাহিনীর একটা অংশকে ব্রিটিশদের সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিহত করতে চন্দননগর পাঠানোর প্রস্তাবে সিরাজ রাজি হয়ে গিয়েছিল। জিনস ল জানত রাই দুর্লভকে বিশ্বাস করা ঠিক হবে না তাই সেনাবাহিনীর উপপ্রধান মীরমদনের সঙ্গে দেখা করে তার সঙ্গে মোটা অঙ্কের চুক্তিতে সেনাবাহিনী পাঠানোর ব্যবস্থা পাকা করে ফেলে। রাই দুর্লভ, মীরমদন ছাড়াও অন্যান্য সেনাপ্রধান এবং আধিকারিকদের অর্থের বিনিময়ে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সবরকমের সাহায্যের আশ্বাস আদায় করে নেয় সে। সব যখন তৈরি এবং সিরাজের সম্মতি কেবল সময়ের অপেক্ষা সিরাজ জানালো যে অস্ত্রপ্রয়োগের আগে ব্রিটিশদের সঙ্গে আলোচনার সমস্ত প্রচেষ্টা চালানো উচিৎ। এর কারণ হিসাবে সিরাজ যুক্তি দেয় যে ব্রিটিশরা তার অনুমতি ব্যতিরেকে কোনও রকম আক্রমণ করবে না বলে জানিয়েছে। সুতরাং পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি সেনাবাহিনী না পাঠিয়ে অপেক্ষা করা এবং পরিস্থিতির ওপর নজর রাখাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এই প্রসঙ্গে ৭ই মার্চ সিরাজকে উদ্দেশ্য করে ক্লাইভের লেখা চিঠির কথা উল্লেখ করা যেতে পারে যে চিঠিতে ক্লাইভ চন্দননগর আক্রমণের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে লেখে যে সিরাজের অনুমতি ছাড়া আক্রমণের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা যাবে না। জিনস ল তার স্মৃতিচারণায় বলে যে ফরাসিদের সাহায্য এবং সৈন্য পাঠাতে দেরি করার পিছনে জগতশেঠের প্রচ্ছন্ন ভূমিকা ছিল।
নিরপেক্ষভাবে দেখতে গেলে বলা যেতে পারে যে ক্লাইভের সঙ্গে কোনরকম বিরোধিতা না করার যে সিদ্ধান্ত সেইমূহূর্তে ভীতসন্ত্রস্ত সিরাজ নিয়েছিল তা সঠিক ছিল মূলত দু’টি কারণে। প্রথমত ফরাসিদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে এবং সেনাবাহিনী পাঠালে ক্রুদ্ধ ক্লাইভ সিরাজের অনুমতির তোয়াক্কা না করে চন্দননগর আক্রমণ করতে পারে। দ্বিতীয়ত একবার চন্দননগর ব্রিটিশদের করায়ত্ত হলে বাংলায় ব্রিটিশবিরোধী শক্তি হিসাবে ফরাসিদের আর কোনও অস্তিত্ব থাকবে না এবং যুদ্ধজয়ী ব্রিটিশ এই যুদ্ধকে মুর্শিদাবাদ পর্যন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে । জিনস ল যখন জগতশেঠের কাছে সাহায্যের আবেদন নিয়ে হাজির হয় জগতশেঠ তখন ধার শোধ করার ব্যাপারে ফরাসিদের সময়ানুবর্তিতার অভাব নিয়ে ঊষ্মা প্রকাশ করে। ল তাদের মূল আলোচনায় টেনে আনলে তারা জানায় যে তাদের সম্বন্ধে ফরাসিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ব্রিটিশদের সাহায্য করার যে অভিযোগ উঠেছে তা সর্বৈব মিথ্যা এবং সর্বোপরি তাদের জ্ঞান এবং বিশ্বাসমতে ব্রিটিশদের এইমূহূর্তে চন্দননগর আক্রমণের কোনও পরিকল্পনা নেই।
নাছোড়বান্দা জিনস ল ছাড়বার পাত্র নয়। সে বলে যে সে নিশ্চিত যে ব্রিটিশরা চন্দননগর আক্রমণ করবে এবং জগতশেঠের কাছে তার একান্ত অনুরোধ যে তিনি যেন সিরাজকে সৈন্য পাঠানোর জন্য অনুমতি দেবার পরামর্শ দেন। তার উত্তরে জগতশেঠ জানায় যে সে অপারগ কারণ সিরাজ এই মূহূর্তে ব্রিটিশদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে চায় না। ল এর বুঝতে বিলম্ব হয় না যে জগতশেঠ কোনও ভাবেই ফরাসিদের সাহায্য করবে না। জগতশেঠের মনোভাব আরও স্পষ্ট হয় তখন যখন জগতশেঠের ঘনিষ্ঠ রঞ্জিত রাই ব্যঙ্গের সুরে বলে,’ তোমরা ফরাসি বীর। তোমরা ব্রিটিশদের এত ভয় পাচ্ছ কেন? ওরা আক্রমণ করলে তোমরাও প্রত্যাঘাত কর। কে না জানে মাদ্রাজ উপকূলে তোমরা কী করেছ? আমরাও ঔৎসুক্যভরে অপেক্ষা করছি দেখার জন্য যে ফরাসিরা কেমন করে তাদের ব্যবসা চালায়?’ কথাপ্রসঙ্গে সিরাজকে গদিচ্যুত করার কথা কানে আসে ল এর। ল যখন সিরাজেকে সবকিছু জানায় সিরাজ পুরো ব্যাপারটা হেসে উড়িয়ে দেয়। আত্মম্ভর, অপরিণত সিরাজকে পরবর্তীকালে এর মূল্য চোকাতে হয় জীবন দিয়ে।
দারুণ লিখেছিস রে মনা। খেলে যা।
ReplyDelete