0

ধারাবাহিক - সুদীপ ঘোষাল

Posted in






নয়

-কি হয়েছে রে,একটি মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলাম । মেয়েটি বললো, জগন্নাথ মন্দিরের ভিতর স্বয়ং জগন্নাথ ঠাকুর এসেছেন ।ভিড় ঠেলে এগিয়ে গিয়ে দেখলাম , একটি বড় পোকা ঠিক জগন্নাথ ঠাকুরের মত সব কিছু ।খুব আশ্চর্য হওয়ার কথা ।এদিকে দাদা ও দিদি এসে গেছেন । ওনাদের বন্ধুর বাড়ি নিয়ে গোলাম । কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়া হলে গ্রামের সবকিছু ঘুরে দেখলেন । পাশের গ্রামে অনেক ভেড়া ,ছাগল জাতীয় পশু দের বলি দেওয়া হচ্ছে দেখে দাদা ও দিদির খুব রাগ হলো ।ওনারা বললেন, এই সুযোগে বলি প্রথা বন্ধ করতে পারলে ভালো হয় । দেখা যাক এই নিরীহ পশু দের যদি বাঁচানো যায়। তার জন্য একটু মিথ্যার আশ্রয় নিতে হলে নিতে হবে ।

যাইহোক গ্রাম ঘুরে বেশ ভালো লাগলো ওনাদের ।রাত্রিবেলা সোরগোল । জগন্নাথ ঠাকুরের প্রসাদ খেয়ে অনেকেই অসুস্থ । তারা সবাই কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ।দাদা মন্দিরের ভিতর ঢুকে বললেন, এত পশুর বলি দান দেওয়া হচ্ছে এই বিপদ অই কারণেই হয়েছে । গ্রামের সবাই যদি প্রতিজ্ঞা করে , বলি প্রথা বন্ধ করবে, তাহলে সবাই সুস্থ হবে । সবাই ঠাকুরের সামনে তাই বললো । আর কিছু করার নেই । বলি বন্ধ হলেই হবে ।অনেক কিশোর কিশোরী ,বুড়ো বুড়ি এই সিদ্ধান্তে খুব খুশি । গ্রামের বেশির ভাগ লোক পশু বলি চায় না ।কিন্তু অভিশাপের ভয়ে কেউ মুখ খোলে না ।হাসপাতাল থেকে সবাই সুস্থ হয়ে ফিরে এলে দিদি বললেন, এই পোকা টি জগন্নাথ ঠাকুরের মত দেখতে । কিন্তু এটি একটি বিষাক্ত পোকা । গভীর জঙ্গলে ওরা থাকে । রাতে প্রাসাদের আঢাকা থালার মধ্যে যাওয়া আসা করার ফলে বিষাক্ত ফ্লুয়িড খাবারে লেগে যায় । সেই প্রসাদ সকালে খাওয়া হয়,আবার তারপরে বলিপ্রথার পাপের ফল ।এই দুয়ে মিশে আমাদের গ্রামের অনেকেই অসুস্থ ।

বিজ্ঞানের যুক্তি দিয়ে সব কিছু বিশ্লেষণ করলেই সব পরিষ্কার হয়ে যায় জলের মতো ।দাদা বললেন, মনে রাখতে হবে , আমরা মানুষ ,পশু নই । তাই আমরা নিজেরা বাঁচার পাশাপাশি আর বাকি সবাইকে বাঁচতো দেবো । তবেই আমরা সুন্দর এক পৃথিবী সৃষ্টি করতে পারবো। কেতুগ্রাম থানার ভুলকুড়ি গ্রামে সন্ধ্যা ছ'টার পর আর কেউ বাইরে বেরোয় না ।একমাস যাবৎ এই অন্ঞ্চলে ভূতের অত্যাচার খুব বেড়ে গেছে ।

গ্রামের শিক্ষিত ছেলে বাবু ছুটতে ছুটতে এসে আমাকে বললো, জানো দাদা জবা দের দোতলা ঘরে জবা শুয়েছিলো । ঠিক বারোটার সময় জানলা দিয়ে হাত গলিয়ে জবার মাথার চুল ছিঁড়ে নিয়েছে ।

-----কবে রে বাবু

------ গতকাল রাতে

------এখন কেমন আছে

-----এখনি ডাক্তার খানা নিয়ে যাবে বলছে

আমি কয়েকদিন ধরে এইরকম কথা শুনছি ।ভাবছি কি করা যায় ।আমার বাড়িতেও তো এইরকম আক্রমণ হতে পারে ।

আজকে রাতে রাস্তায় কেউ নেই । আমি দোতলার বারান্দায় রাত বারো টা অবধি জেগে থাকলাম । কিন্তু ,কাকস্য পরিবেদনা । কেউ নেই । একটু ভয় ভয় লাগছে ।তারপর রাত্রি র অপরূপ রূপে মগ্ন হয়ে আমি ঘুমিয়ে পড়লাম ।সকাল বেলা পেপার আর চা নিয়ে কোকিলের ডাক শুনছিলাম ।

হঠাৎ মন্ডল পাড়ার স্বদেশ এসে আমেজ টা নষ্ট করে দিলো ।

-----দাদা,কালকে আমাদের পাড়ায় ভূতটা ঘুরছিলো ।প্রায় দশ ফুট লম্বা ,বড়ো হাত আর কালো রঙ ।ভয়ে আমার বাবা অজ্ঞা ন হয়ে গিয়েছিলো ।

____এখন ভালো আছেন ?

_____না না ,এখনও বু বু করছে ।

আমি আবার চিন্তার মধ্যে ডুবে গেলাম ।কি করা যায়,এই সমস্যা সহজে সমাধান করা খুব কঠিন ।প্রকৃতির নিয়মে আবার রাত হলো ।গ্রামের সহজ সরল মানুষ এই সব বিপদের দিন অসহায় হয়ে যায় ।রাতে শুয়ে চিন্তা করলাম মুস্কিল আসান করার জন্য কিশোর মনোবিজ্ঞানের সুমন্ত ভট্টাচার্য মহাশয়কে খবর দিতে হবে । সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে চড়খীর অমল কে ফোন করলাম । আমার মনে আছে অদৃশ্য নাথ সেই ভয়ংকর বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছিলো জয়ন্ত দা ও হৈমন্তী দি র জন্য।

অমল ফোন করে সুমন্ত ভট্টাচার্য মহাশয়ের আসার সমস্ত ব্যবস্থা করে দিলো ।সঙ্গে আসছেন কিশোর মনো বিজ্ঞানের সহ সম্পাদনা সচিব রত্না দিদি । তিনি বিখ্যাত পরিবেশ বিজ্ঞানী । আমার একটু সাহস বাড়লো । ওদের সাথে আমার বন্ধু অমল কেও আসতে বললাম ।

0 comments: