ধারাবাহিক - সুব্রত ঘোষ
Posted in ধারাবাহিকঅতলান্ত কথা
প্রথম কথা :
পুরনো ছবির অ্যালবাম ঘাঁটতে গিয়ে বহূদিন আগের কিছু ছবি বেরিয়ে এলো, যা' পুরনো অনেক স্মৃতিকে সামনে হাজির করল ৷ সে স্মৃতি কালের প্রবাহে দূরে গেলেও সর্বদাই আত্মার খুব কাছের ৷ কখনো আমার জ্ঞাত সভ্যতার থেকে অনেক দূরে, অন্য স্বাদ-বর্ণ-গন্ধ সমাহারে এক ইন্দ্রিয়াতীত বোধ আটলান্টিক মহাসমুদ্রের কূলে কূলে অজানা মানিক সংগ্রহ করে বেড়িয়েছিল। সেই অমূল্য অভিজ্ঞতার মানিক্যরাশি আজও কথা বলে আমার সঙ্গে.....সে যেন এক অন্য জন্মের কথা ৷
ঘুমের মধ্যে আজও কানে ভেসে আসে গম্ভীর দামামার তাল। কত কৃষ্ণাঙ্গ শিশু সমুদ্রর জলে খেলা করার ছবি। কিংবা একসঙ্গে ছ’জন লোকএকই পাত্র থেকে একসঙ্গে আহার করা। অথবা চাঁদনি রাতে উঁচু টিলার ওপরে দল বেঁধে নাচ........ এসব কত কিছু আমাকে ঘিরে থাকে। স্মৃতির কাছে যেন একটা দায় অনুভব করি। বন্ধুদের অনেকেই আমার এই আটলান্টিকের গায়ে আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলের গল্প শুনতে ভালবাসে। ওদের অনকদিনের আবদার একটা লেখা এই সব অভিজ্ঞতার ওপরে। অভিজ্ঞতার অনেকাংশই যে আমার বহু ছবির প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে তা’ অনেকের কাছেই দৃশ্য। বিখ্যাত সুইস্-ফরাসী কবি Blaise Cendrars এর কবিতাও আমার ওপরে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। এই কবি আমার জন্মের বহু পূর্বে এই আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে ঘুরে বেড়িয়েছেন।।এই দেশ, মানুষ জন ভালোবেসে অনেক কবিতা লিখেছিলেন তিনি। আমি ওঁর কবিতা আর আমার ছবি নিয়ে আলোচনাও করেছি অনেক ৷ আমার এই চর্চা অনেককেই উদ্বুদ্ধ করেছিল৷ কলকাতার অনেক তাবড় কবিরা ব্লেস্ সন্দ্রার নাম জানত না সেই সময়ে ৷ কিন্তু আমার ফরাসী ভাষার শিক্ষক শ্রী পুষ্কর দাশগুপ্ত আমাকে ওঁর বিষয়ে খুব উৎসাহ দিয়েছিলেন ৷ মাস্টারমশাই মানে পুষ্কর দা' বেশ কিছু Blaise Cendrars য়ের কবিতা অনুবাদ করেন ৷ ওর মতো বিদগ্ধ মানুষের সান্নিধ্যে আসাকে আমি পরম সৌভাগ্য মনে করি ৷
ব্লেস্ সন্দ্রার্ আইভরি কোস্ট, ঘানা, সেনেগাল, মালি – এসব দেশগুলো ঘুরেছিলেন ১৯২০ এর দশকে। কিন্তু আমি নব্বই এর শেষের দিকে গিয়ে দেখি ওঁর অভিজ্ঞতার থেকে আমি খুব দূরে নেই। প্রায় সেই একই আবহাওয়ায় যেন দাঁড়িয়ে আছি। তখন সদ্য computerএসেছে। লোকের কোলে কোলে তখনও তা’এসে পৌঁছয় নি। দূরাভাষের এই আধুনিক রূপ তখনও চলমান হয় নি। অনেক কষ্ট করে কখনো বাড়ীতে একটা যোগাযোগ করার সুযোগ পেতাম। বেশীরভাগ সময়টাই আটলান্টিকের কূলেই কাটত। কখন যেন এই উপূলের জীবনে মিশে গিয়েছিলাম আমার বোধের অগোচরেই। আমার এই সফর সফল হওয়ার জন্য সিংহভাগ কৃতিত্ত UNESCO সংস্থার, যার Head quarters প্যারিসে। আমার শিল্পকর্ম নিয়ে এক গবেষনামূলক প্রকল্পই ছিল এই যাত্রার মূল উদ্দেশ্য। শিল্পের টানে পৃথিবীর যে কৃষ্ণ ভূমিতে এসে উপস্থিত হয়েছিলাম, সেই মাটি আমাকে মানব জীবনের আদি অনন্তের ছোঁয়া দিয়েছিল। বুঝেছিলাম সেই আদি অকৃত্তিম সত্তাটাকে আমরা আমাদের দেশে অনেক যুগ আগেই ঔপনিবেশীকতার তলায় কবর দিয়েছি। কিন্তু আফ্রিকার এই অঞ্চল, দীর্ঘ বছর দাসত্যের শেকল বন্দি থেকে আজ মুক্তির আলোয় শরীরের রং যেমন পাল্টায় নি, পাল্টায় নি তাদের আদি অকৃত্রিম মানবিক হাসি।
আমার ভ্রাতৃপ্রতিম কবি মানস ঘোষ আমাকে এই লেখার জন্যে উষ্কে দিয়েছিল। সেই প্ররোচনা অনুঘটকের ভূমিকা নেয় এই লেখা সম্পূর্ন হওয়ার জন্য।অনেকদিন ধরে অনেক সজ্জনই আমাকে এ বিষয়ে উৎসাহ দিয়ে এসেছে। তাদের মধ্যে আমার দিদি কৃষ্ণা সেনের ভূমিকা অগ্রগণ্য। উল্লেখ করতে চাই স্বর্গীয় কবি অরুণ মিত্রর অনুপ্রেরণার কথা। বন্ধু আলেকজঁন্দ্র, রঁব্যা আর লেখক চিন্ময় গুহর নাম এই তালিকায় অবশ্যই অন্তর্ভূক্ত। সকলকেই আমার কৃতজ্ঞতা স্বীকার।
১ম পর্ব
মায়াবী স্যাক্সোফোন
আমাদের ফ্লাইট টা খুব সুস্থ ভাবে উড়ছিল না। আকাশে রোদ আর মেঘের খেলা চলছিল। উপভোগ্য আকাশ। তবুও বারংবার এই উরোজাহাজটি ওপর নীচ করায় খুব ঝাঁকুনি হচ্ছিল। মাঝে মাঝেই কিছু যাত্রির উচ্চৈস্বরে নালিশ কানে ভেসে আসছে। এয়ারপোর্ট এ আলাপ হয়েছিল জর্জ নামের এক যুবকের সঙ্গে। ঘার ঘুরিয়ে দেখতে পেলাম ওর বসার জায়গা আমার কয়েক সারি পেছনে। ও দক্ষিণ আফ্রিকা র মানুষ ৷ শুদ্ধ ইংরেজী তে কথা বলে। একেবারেই ফরাসী বোঝে না। এ দিকে উড়োজাহাজটির মধ্যে সব কথাবার্তাই ফরাসীতে হচ্ছে। যাত্রিদের প্রতি আবেদন শোনা গেল – ‘ Mesdames et messieurs, soyez patient....’ এই আবেদন যাত্রিদের ওপরে খুব প্রভাব ফেলল বলে মনে হয় না। একজন প্রায় লাফিয়ে গিয়ে এক বিমান সেবিকাকে বিমানের এই অনাবশ্যক ঝাঁকুনির কারন জানতে চাইলেন। উত্তরে সেই দীর্ঘাঙ্গী সেবিকা ঠিক ঐ পাইলটের ঘোষনাটাই পুনরাবৃত্তি করলেন। “যাত্রীরা, দয়া করে ধৈর্য্য ধরুন।“
বিমানে ভীষণ আওয়াজ হচ্ছে। সকলেরই কপালে ভাঁজ। এরমধ্যে জর্জ আমার সারির কাছে এসে আমার পাশের যাত্রির সঙ্গে জায়গা বদল করতে চাইল। পাশের যাত্রি কোনো আপত্তি না করে জর্জ এর জায়গায় চলে গেলেন। ভালোই হল। জর্জ চাইছিল আমার সঙ্গে কথা বলতে। ঝকঝকে সাদা দাঁত বের করে বললো, ‘Thank Lord, at least I can talk to someone now....ha ha ha ‘. Plain এর গতিবিধি ভালো ঠেকছে না। আমি একটু দাঁড়িয়ে সব কিছু দেখার চেষ্টা করতে চাইলাম। জর্জ বলল, ‘Come on man, listen to this. You should enjoy this’. ওর কোলের ওপর একটা CD player বাজছিল। আমাকে ওর head phone এর একটা cord প্রায় ছুঁড়ে দিল। কানে দিতেই বজ্রপাতের মত ড্রামের চাপড়ের আওয়াজ ফেটে পরলো। একটু ধাতস্থ হলাম স্যাক্সোফোনের আওয়াজে। তারপর আস্তে আস্তে ড্রাম আর স্যাক্সোফোনের মিশ্রণে এ তলিয়ে গেলাম। আমার শরীরে তরঙ্গ খেলতে লাগলো। মনে হলো শরীর – মন দুই যেন ঐ ধ্বনির সঙ্গে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। সব উদ্বিগ্নতা কোথায় উবে গেল।
আমরা মনে হয় ক্যামেরুনের ওপর দিয়ে উড়ছি। তোগোল্যয়েস এখনো অনেকটা দূর। আকাশ সমুদ্র, সব মিশে একাকার। এক গভীর নীলের বলয়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আর এই স্যাক্সোফোন আমাকে আজ বধ করবে মনে হয়.....কি মায়াবি সুর!
সুরের মায়া কেটে গেল অচিরেই । হঠাৎ ভীষণ গোলযোগ। সমাচার এলো, যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দেওয়ায় বিমান কে এক্ষুনি জমিতে নামাতে হবে। তোগো পর্যন্ত যাওয়ার ক্ষমতা নেই। বিমানটি কে অতি দ্রুত কোথাও নামতে হবে। পাইলটের ডেস্ক জানাচ্ছে যে, সবচেয়ে কাছের এয়ারপোর্ট আছে দুয়ালায়। দুয়ালা, ক্যামেরুনের সর্বোবৃহত্তম শহর। আমাদের বিমান তারই উদ্দেশ্যে চলল। জর্জের কোনো দুশ্চিন্তা আছে বলে মনে হল না। কিন্তু দুশ্চিন্তা আরও ঘনীভূত হল বিমানের ঘোষণায়। যাত্রিদের life jacket নিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলা হচ্ছে। আমরা এখন সমুদ্রের ওপর। আর একটু ডানদিকে গেলে দুয়ালার সমুদ্রতট। আরও জানলাম, আমাদের বিমানের পেছনে লেজের অংশে আগুন দেখা গেছে। নীচে জল, গায়ে আগুন – ভয়ঙ্কর ব্যাপার।
অবশেষে প্রায় সমুদ্রের জল ছুঁয়ে আমাদের বিমান দুয়ালা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে নামলো। আমরা খুব তারাতারি সিঁড়ি দিয়ে নেমে এলাম। চারিদিক দমকলকর্মীরা ঘিরে রেখেছে। আছে অনেক বন্দরকর্মীও। বিমানের ওপরাংশে ক্রমে কালো ধোঁয়া পাকিয়ে উঠছে। আমরা lounge য়ে পৌঁছে গেলাম। লাগেজ এখন পাওয়া যাবে না। পরে ওরা খবর দেবে । সঙ্গের হাত ব্যাগ নিয়ে হটেলের দিকে রওনা দিলাম । এই ভয়ঙ্কর সময়েও চারিদিকের অপার সৌন্দর্য্যকে উপেক্ষা করা গেল না। একদিকে অদ্ভুত সবুজের বৈচিত্র সমাহার। সেই সবুজের মেলা একা উঁচু উপতক্যার গা বেয়ে উঠে গেছে। আমি যেন কেমন এই হঠাৎ বৈপরত্যের মধ্যে হারিয়ে যেতে লাগলাম। ওদিকে গাড়ির জানলা দিয়ে যখন দীগন্তহীন সুনীল জলরাশি কে যেভাবে বিকেলের আকাশের গায়ে মিশে যেতে দেখলাম, বুঝলাম আমার নিজের অস্তিত্তের ওপর আমার আরকোনো নিয়ন্ত্রন নেই। সবটাই যেন এক যাদুকরের খেলা। সবুজ - সাদা পাম গাছের সারির মধ্যে দিয়ে hotel এর gate এ এসে গাড়ি দাঁড়াল। Hotel টি সুদৃশ্য। কয়েকটি কৃষ্ণাঙ্গী সুন্দরী আমাদের স্বাগত জনালেন। জর্জ ও আমার সঙ্গেই হাঁটছিল। যে যার ঘরে যাওয়ার আগে আমরা ঠিক করলাম যে, সন্ধে বেলায় নীচে দেখা করছি।
দুয়ালা এ দেশের শুধু বৃহত্তম শহরই নয়, বৃহত্তম বানিজ্যিক কেন্দ্র ও। এছাড়াও এর সমুদ্র বন্দরও খুবই বিখ্যাত। সম্ভবত: এই বন্দর আফ্রিকার পশ্চিম ও কেন্দ্রীয় অঞ্চলের মধ্যে সর্ববৃহত্তম। এখান থেকে নিয়মিত তেল, কফি, কোকো আর অনেক ফল রপ্তানি করা হয়। প্রাচীনকাল থেকে আজ অবধি ইওরোপীয় দেশগুলো এই সব জিনিসের জন্য হামলে পড়ে এখানে। দুয়ালা এখন এক উন্নত শহর। ঊরি নদীর অববাহিকায় এর জন্ম। এখন তার দুধারে লম্বা সেতু হয়েছে। হটেলের ঘরে টেলিভশনে এই সেতু আর রেল লাইন নিয়ে একটি প্রতিবেদন দেখছিলাম।
দিনের আলো নিভে এলো ৷ হটেলের চেহারা বদলে গেল। নীচে একটা বিরাট বাগান। তার দু’ দিকে দু’টো জলাশয়। অনেক তারা আর গ্রহের মতই নানান আলোর বৃত্ত মাথার ওপর ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। তাদেরই প্রতিবিম্ব জলের ওপরে পড়েছে । কানে ভেসে এল এক মোহময় সুর, স্যাক্সোফোন । গম্ভীর এক কন্ঠ মাঝে মাঝে সুরে মিশে যাচ্ছে। মুহূর্তের জন্য মনে হলো যেন এক গ্রহান্তরে সকলের অগচোরে অবলোকন করছি। আমি কে, তা’ ঠিক জানি না । সম্বিত ফিরলো জর্জের ডাকে। আমরা এগিয়ে গেলাম বাগানের ভেতরে। সেখানে ইতস্তত: অনেক টেবিল সজ্জিত। তাদেরই একটায় আমরা দু’জনে জায়গা নিলাম।
কফি তে চুমুক দিয়ে যে আরাম বোধ হলো, তা’ ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। জর্জের মুখেও তৃপ্তির হাসি। অদূরে অনেক পুরুষ, মহিলা নিজেদের মধ্যে আলাপচারিতায় ব্যস্ত। মাঝে মাঝে হাসি, কথা, পানপাত্রের টুং টাং শব্দ সমাহার এই প্রকৃতির এক অন্য মাত্রা কে প্রতিভাত করেছে। ‘জর্জ, তুমি কিসের সঙ্গে যুক্ত ?’ – আমার কফি সঙ্গী কে জিজ্ঞেস করে ফেললাম৷ ভাবলাম ওর সম্পর্কে একটু জানা যাক। জর্জ বলল যে, ও আফ্রিকার Social History নিয়ে গবেষণা করে কেপ টাউন এর কোন এক ইউনিভার্সিটি। কফি র কাপের দিকে তাকিয়ে বললো, ‘এই যে কফি টা পান করছো, তা’ এই দেশেই উৎপন্ন হয়’। কফি র থেকে চোখ না সরিয়ে বলতে থাকল, ‘ প্রায় গোটা ইওরোপে এই কফি র জনপ্রিয়তা অতুলনিয়। কিন্তু বেশীর ভাগ মুনাফা ইওরোপীয় ব্যবসায়ীরাই পায়।‘ ওর একটা দীর্ঘশ্বাস শুনতে পেলাম। ওর কাছে আরও জানলাম, শুধু কফি নয়। কোকো, তেল, অনেক ফল,শষ্য – আরও অনেক কিছুই এ দেশ থেকে ফরাসী দেশ, বেলজিয়াম, ইতালি, জার্মানীর মতো তাবড় ধণী দেশগুলোতে নিয়মিত রপ্তানী হয়। কিন্তু আজও এ দেশের আর্থিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয় নি প্রাচীন কাল থেকে। জর্জ থামলো। হেসে বললো, ‘এ সব শুনে আজকের সন্ধ্যেটা নষ্ট কোরো না। চলো মায়াবি রাতকে তার জন্ম লগ্নেই ধরার চেষ্টা করি। সে আমাদের অপেক্ষায় আছে যে।‘ ওর এক গাল হাসি আর ক্ষণিকের জন্য ডান চোখের পলক ফেলা দিয়ে যেন এই রসিক রাতের যাত্রা শুরু হয়ে গেল।
‘চিরায়ত’ - চিত্রশিল্প (মিশ্র মাধ্যম) – সুব্রত ঘোষ
পার্টির বৃত্তে প্রবেশ করতেই এক অচেনা সুন্দর বাজনা আমাকে যেন টানতে লাগলো। সেই টানেই চলতে লাগলাম। সঙ্গীতের তরঙ্গ যেন বিদ্যুতর মতো খেলে যাচ্ছে। আর কি মায়াবী ঐ স্যাক্সোফোনের সুর ! বাগানের চারিদিকে সব অদ্ভুত কাঠের মুখোশ দিয়ে সাজানো। তাদের ওপর হালকা নীল –বেগুনি আলো ঘুরে পড়ছে। একটু দূরে আবছা অন্ধকারে নিয়ন দিয়ে লেখা ‘ Soul Makossa’। জর্জ আমার কাছে মুখ এনে বললো যে এই musician এর music ই নাকি flight এ ও আমাকে শুনিয়েছিল। ‘Soul Makossa’ ওর বিখ্যাত অ্যালবাম। সেই স্যাক্সোফোন । জানলাম, এই পশ্চিম আফ্রিকা অঞ্চলের সবচেয়ে জনপ্রিয় সঙ্গীতবিদের বাজনা বাজছে। তার নাম মানু দিবাঙ্গো। তার খ্যাতি আফ্রিকা ছাড়িয়ে ইওরোপেও বিস্তৃত। মানু দিবাঙ্গো এই ক্যামেরুনেরই মানুষ। এই দুয়ালা শহরেই তার জন্ম। নিয়ে তার স্যাক্সোফোন দীর্ঘ যাত্রা সুমধুর ইতিহাস। সেই ইতিহাস নিয়ে যেমন আফ্রিকানরা গর্বিত, তেমনি ফরাসীরাও তাকে নিয়ে অহঙ্কার প্রকাশ করতে দ্বিধা করে না। তার এখন বাসস্থান প্যারিসে। এই হটেলের পার্টিতে মানুর সেই বাজনা বজাচ্ছে কিছু তরুন যুবক। তাদের drummer রা অপূর্ব ছন্দে drums বাজাচ্ছে। এক নৃত্যের পরিবেশ তৈরী হয়ে গেল যেন কোনো জাদুছোঁয়ায়। এক সুবেশী কৃষ্ণাঙ্গ সুন্দরী আমার দিকে একটি পানপাত্র্র এগিয়ে দিল। মিষ্টি হেসে বললে, ‘Bonsoir Monsieure” (শুভ সন্ধ্যা)।
(আমাদের কাছে অতি দুঃখের বিষয় যে কিংবদন্তী Jazz ও Saxophone শিল্পী মানু দিবাঙ্গো কয়েক দিন আগে ইহলোক ত্যাগ করেছেন। এই লেখাটি তার পূর্বেই সম্পন্ন হয়।)
0 comments: