0

পথে প্রবাসে - অচিন্ত্য দাস

Posted in







আমি আর সার্জেন্ট ম্যাথু

ক্যালিফোরনিয়ার দক্ষিণ দিকে এই শহরে আমি আগেও থেকেছি। উঁচু-নিচু পাহাড়ি অঞ্চল জুড়ে ছড়ানো শহর। বাস বা মেট্রো ট্রেন তেমন নেই যে এদিক ওদিক ঘুরে আসা যাবে। দোকান-পাট, বাজার কিংবা পার্ক, এত দূরে দূরে যে গাড়ি ছাড়া যাওয়াই যায় না। তবু বাড়ি থেকে মাইল খানেক দূরে একটা পেট্রোল ভরানোর জায়গা আছে, এরা বলে গ্যাস স্টেশন। সঙ্গে দু-একটা রেস্তঁরা, স্টার বাকস্ কফির দোকান, ‘পাঁচ ডলারে এক পাইন্ট’ লেখা বিয়ারের ঠেক।

সেখানে যেতে হলে চার লেনের বড় চওড়া রাস্তার ফুটপাথ ধরে হাঁটতে হয়। ডানদিক দিয়ে সাঁ সাঁ করে দ্রুতগতিতে গাড়ি, ট্রাক চলে যায়। আর বাঁ-দিকের জমি একটা টিলায় অনেকখানি উঁচুতে উঠে গেছে। টিলার ঢালে ইতস্তত পাইন, ইউক্যালিপ্টস বা ম্যাপেল গাছ। আর আছে বুনো ঝোপঝাড়, ঘাস, আগাছা। এ রাস্তায় আমি আগে অনেক অনেক বার হেঁটেছি তবে এবারের পথচলা একেবারে অন্যরকম লাগছিল।

আমি বড় হয়েছি কোলকাতা শহরে, বাড়িতে সকাল থেকে রাত্তির অবধি রেডিওতে কলকাতা ক চালানো থাকত। বাড়ির রেডিও কোন কারণে বন্ধ হলেও বিরতি বলে কিছু ছিল না। পাশের বাড়ি বা পাশের পাশের বাড়ি থেকে স্পষ্ট শোনা যেত। কলকাতা ক এ রবীন্দ্রনাথের গানের আনুষ্ঠান, রেকর্ড বা লাইভ, লেগেই থাকত। সকাল-দুপুর-সন্ধে-রাত্তিরের বাছবিচার ছিল না। বহু গানের লাইন তাই মনের চেতন-অবচেতন কুঠুরিতে ঢুকে পড়েছিল, এতদিন পরেও রয়ে গেছে। পথচলা অন্যরকম লাগার সঙ্গে সঙ্গে মনের ভেতর থেকে বেজে উঠল – ‘এ পথে আমি যে গেছি বারবার, ভুলিনি তো একদিনও, আজ কি ঘুচিল চিহ্ন তাহার উঠিল বনের তৃণ...’

আসলে চেনা রাস্তা এবারে অন্যরকম লাগার কারণ আছে। এ বছর এদেশে ভালো বৃষ্টি হয়েছে, তাই শীতের পরে বসন্ত আসার সঙ্গে সঙ্গে মাঠঘাট ঝোপঝাড় বুনো ফুলে ভরে উঠেছে। এরকম বুনো ফুলের উৎসব আগে দেখিনি। হলদে, গাঢ় হলদে, বেগুনি, সাদা, গাঢ় নীল, কমলা – বিচিত্র সব রঙের ছড়াছড়ি। কোথাও একই আগাছায় ভিন্ন রঙের ফুল – সাদার পাশে তিন চার রকমের লাল। ঘাসের ওপর ফোটা বেগুনি ফুল একেক জায়গায় এমন ভাবে ছেয়ে রয়েছে যে একটু দূর থেকে মনে হয় কেউ যেন বুরুশ দিয়ে জমি রং করে রেখেছে।

রাস্তা অন্যরকম লাগার আরেকটা কারণও আছে অবশ্য। বছর সাতেক আগে এ শহরে যখন এসেছিলাম তখন এ রাস্তায় হাঁটতাম আমরা দুজনে। লক্ষ্য থাকত কফির দোকান। দোকানের দেয়ালে টাঙানো তালিকাটা দেখতাম – সেখানে নানা রকমের কফির নাম লেখা। আমাদের মধ্যে বচসা শুরু হয়ে যেত। আমি বলতাম আজ ‘আমেরিকানো উইথ হ্যাজেল নাট ফ্লেভর’ নেবো। সে বলত একদম না। আজ কাপুচিনো। আমি বলতাম বড় কড়া – দুপুরের ঘুমটা ভালো হবে না। শেষে অবশ্য ওর কথাই থাকত। সে আমার পাশে আজ হাঁটছে না। গত বছর আমার সাথী সব পথের শেষে চলে গেছে সবকিছু ছেড়ে। এখন বুঝলাম ওই বচসাটুকু না থাকায় কফিপান করার সব মজা সব আগ্রহ কোথায় যেন মিলিয়ে গেছে। আমি আজ লক্ষ্য ছাড়াই হাঁটছি।


রাস্তায় মানুষ দেখা যায় না বললেই চলে। তবে দৈবাৎ সামনে কেউ এসে পড়লে, তিনি মহিলা বা পুরুষ যেই হোন না কেন, মিস্টি হেসে ‘হাই’ বা ‘গুড আফটারনুন’ বলেন। আমিও ব্যাপারটা শিখে নিয়েছি। যেমন একটি লোককে দেখলাম তিনজন সঙ্গী নিয়ে আসছেন ওদিক থেকে। তিনজন মানে তিনটি কুকুর – একটি বড় আর দুটি শিশু কুকুর। সব এক জাতের, মানে ছোট দুটো বড়টির সন্তান হবে আর কি। সারমেয়চারক (মেষচারক কথাটা অভিধানসম্মত হলে এ শব্দটিও চলা উচিত) আমাকে দেখে ব্যস্ত হয়ে ফুটপাথ ছেড়ে পাশের আগাছাময় জমিতে তিনটি পোষ্য নিয়ে সরে গেলেন। মুখে বললেন ‘সরি’। মানে এনার কারণে আমার পথ চলার অসুবিধে হয়েছে, তাই তিনি দুঃখিত। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই ভদ্রতাবোধ আমি ইউরোপ-আমেরিকা বা জাপানের মতো দেশেই দেখেছি। আমাদের দেশ হলে ইনি আমার দিকে কটমট করে তাকাতেন – সে খরদৃষ্টির মানে – ‘আরে উজবুক কোথাকার! রাস্তা ছেড়ে দাঁড়া, কামড়ে দিতে পারে। চোখ নেই নাকি।’

আমি আমার সাধ্য মত ইংরেজিতে বললাম “না, না ঠিক আছে। তোমার ‘হাস্কি’ তিনটে খুব সুন্দর।” এইরকম দেখতে কুকুরের জাত যে হাস্কি তা আমার নতুন শেখা। সুযোগ পেয়েই প্রয়োগ করে দিলাম। লোকটি আমাকে ধন্যবাদ দিয়ে স্মিত হেসে চলে গেলেন।

বুনো ফুলের বাহার দেখে মনে হচ্ছিল ঋতুরাজ বসন্ত স্বয়ং সামনে এসে দাঁড়িয়েছেন। হলদে ফুলে ছেয়ে থাকা প্রান্তর যেন তাঁর বসন প্রান্ত, থেকে থেকে মৃদু বাতাসে আন্দোলিত। লাল-নীল-কমলা-গোলাপী ফুল যেন তাঁর অঙ্গের ভূষণ, মাথার মুকুট। এ দেশ আমাদের দেশ থেকে বহুদূরে, সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে। পৃথিবীর উল্টোপিঠে। এখানকার জলবায়ু, গাছপালা, জীব-জন্তু সম্পূর্ণ আলাদা। তবু রাস্তার ধারে রঙ-বেরঙের ফুলের ঘটা দেখে মনের ভেতরে সেই অনেকদিনের ফেলে আসা কলকাতা ক বাজতেই থাকল। ‘রং লাগালে বনে বনে কে…’, বনে এমন ফুল ফুটেছে…’ বা ‘কী অচেনা কুসুমের গন্ধে…’। রবীন্দ্রনাথ যদি বসন্তকালে এই দেশে, এই অঞ্চলে কটাদিন কাটিয়ে যেতেন তাহলে গীতবিতানে আরও শখানেক বসন্তের গান নিশ্চয় যোগ হতো। এইসব এলোমেলো কথা ভাবতে ভাবতে হাঁটছি, এমন সময় বাঁ পাশে একটা কম আগাছার জায়গা দেখলাম। এরকম নেড়া জমি দেখলে বোঝা যায় এ দেশের মাটি কিছুটা রুক্ষ ধরনের। তবে এখানে এমন কিছু ছিল যে আমাকে দাঁড়িয়ে যেতে হলো।

ফুট চারেক উঁচু একটা ক্রস মাটিতে পোঁতা। তার নিচে অনেক ফুল রয়েছে। প্লাস্টিকের ফুল নয়, কেউ আজ কিংবা বড়জোর কাল সন্ধেবেলা রেখে গেছে। সেখানে কাচের ফ্রেমে বাঁধানো দু-তিনটে ছবিও রয়েছে। একটি যুবকের, মোটর সাইকেল পাশে নিয়ে। আর রয়েছে অনেকগুলো আমেরিকার পতাকা, কিছু সাজাবার উপকরণ। একটা নীল রঙের কাগজের চক্রও আছে। এ জিনিস ছোটবেলায় চড়কের মেলা থেকে কিনতাম, হাওয়া দিলে ঘুরতে থাকে। যত জোরে হাওয়া বয় তত জোরে ঘোরে। আমরা বলতাম সুদর্শন চক্র। ক্রসটার আড়াআড়ি আংশতে একটা নাম লেখা আছে – সার্জন্ট ম্যাথু লোয়ানথাল। যেটা দেখে আমার মনটা বড় খারাপ হয়ে গেল তা হলো – ছেলেটি মারা গেছে মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে। জন্ম পনেরোই অক্টোবর উনিশশো পঁচানব্বই আর মৃত্যু …. তারিখটা ঠিক দেখছি তো … ইস, জন্মদিনেই ছেলেটি মারা গেছে। আরও বোঝা যাচ্ছে ছেলেটি আমেরিকার নৌসেনাতে কাজ করত। কাছেদূরে এতো ফুল ফুটেছে যে আমার সেই ‘সাত ভাই চম্পা’ গল্পটা মনে পড়ে গেল। এই ভাইটির জন্য কি কোথাও পারুল বোন নেই! যে একবার ডাকলেই ছেলেটি ছবি ছেড়ে উঠে এসে পা দিয়ে তার মোটর-সাইকেলটা ঝটাং করে চালু করবে?

আজকাল সকলের পকেটেই এক সবজান্তা মহাপুরুষ বাস করেন যাঁর নাম শ্রীগুগুল মহারাজ। আমি তাঁকে স্মরণ করে প্রশ্ন রাখলাম – সার্জন্ট ম্যাথু সম্বন্ধে জানতে চাই। এদেশে ফাইভ-জি চলে, তাই পট করে জবাব এসে গেল। ছেলেটি মোটর-সাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিল, কয়েকদিন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে পনেরোই অক্টোবর মারা যায়। ছেলেটি এই শহরে নৌসেনার ঘাটিতে কাজ করত, কাজের স্বীকৃতি হিসাবে বেশ কটা পদকও পেয়েছিল।

আমার মনে হলো ছেলেটি তার চব্বিশতম জন্মদিনটা দেখে যাবে বলেই হাসপাতালে ওই কটা দিন প্রাণটুকু ধরে রেখেছিল।

কফির দোকান অবধি গেলাম তারপর উদ্দেশ্যহীন ভাবে এদিক ওদিক তাকিয়ে কফি না নিয়েই ফিরতি পথ ধরলাম। কোলকাতা ক, ভিনদেশি প্রকৃতির আশ্চর্য সুন্দর রূপ এসবের সঙ্গে ওই সার্জেন্ট ম্যাথুর কথাটা মাথায় রয়ে গিয়েছিল।

সার্জেন্ট ম্যাথুর জায়গাটা এবার আমার ডানদিকে। আমার পা আবার আটকে গেল। মনের ভুল? কি জানি। ছবির ম্যাথু আমাকে ডাকছে। ‘দাঁড়াও পথিকবর জন্ম যদি তব বঙ্গে, তিষ্ঠ ক্ষণকাল …’ না, না তা কী করে হবে। এ তো অন্য দেশ। আর এটা নিশ্চয় একটা স্মৃতিচিহ্ন – এ শহরে সামরিক বাহিনীর জন্য এক বিস্তৃত সমাধি ক্ষেত্র আছে (আমি দেখেছি) – এ ছেলেটির সমাধি নিশ্চয় সেখানে। তবু আমি দাঁড়িয়ে পড়লাম। ছবির ম্যাথু হাসিহাসি মুখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বলছে “তোমাকে ভারি আনমনা লাগছে, তুমি কি কিছু ভাবছ যেতে যেতে?”

বললাম “হ্যাঁ, এ রাস্তা আমার চেনা। অনেক হেঁটেছি দুজনে। এখন সে আর নেই। তাই একা একা লাগছে, এই আর কি…”

“তুমি তো অন্যদেশের মানুষ। কবে এসেছিলে?”

“গত বছরই এসেছিলাম কিন্তু আমার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়াতে তাড়াতাড়ি দেশে ফিরে গিয়েছিলাম। তার আগে এসেছিলাম দুহাজার ষোলতে, সেবার দুজনে এ রাস্তায় প্রায় রোজই হাঁটতাম।”

এ অঞ্চলে মাঝেমাঝেই জোর হাওয়া ওঠে। প্রশান্ত মহাসাগরের হাওয়া। ঝোপ-ঝাড় বড় গাছের পাতা সকলেই একসঙ্গে নুয়ে পড়ল। মহাসাগরের বাতাসকে সম্মান জানিয়েই বোধহয়। আর সেই সুর্দশন চক্র বাতাস পেয়ে হসহস শব্দ করে ঘুরে উঠল। আমার মনে হল এই ধ্বনি, গাছ-পালায় পলক দুয়েকের এই সঞ্চরণ – এ যেন ছবিতে আটকে থাকা ম্যাথু ছেলেটির দীর্ঘশ্বাস।

“ওহ, দুজার ষোলো! ষোলতে তো আমি এখানে ছিলাম না। তখন আমি নৌসেনাতে কাজ করি। এই শহরেই নৌসেনার বড় ঘাঁটি আছে জান তো? আমাকে সকলে খুব ভালোবাসতো, কাজে খুবই ভালো ছিলাম। অনেকগুলো মেডেল, পদক, সম্মান-টম্মান পেয়েছিলাম”

“তারপর কী হলো?”

“আরে আর বলো কেনো। এই রাস্তাদিয়েই আমার প্রিয় বাহন মানে মোটর-সাইকেলে কোথায় যেন যাচ্ছিলাম। সেদিন একটু বেশি জোরেই চালাচ্ছিলাম, তবে ওই রকম গতিতে আগে বহুবার চালিয়েছি, কিছু হয়নি। সেদিন কী করে যেন হাতটা একটু নড়ে গেল – সোজা ধাক্কা খেলাম রাস্তা-বিভাজকে মানে যাওয়ার আর আসার রাস্তার মাঝে যে সিমেন্ট করা আলের মতো থাকে সেটাতে। চোখ খুলে দেখি হাসপাতালের বিছানায়। তারপরেই ঘুমিয়ে পড়লাম।

“কতদিন যে শুয়েছিলাম জানি না। একদিন একটু সময়ের জন্য ঘুম ভেঙেছিল। দেখলাম আমার ছোটবোন আমার বিছানার পাশে বসে খুব কাঁদছে। তার হাতে একটা রঙীন ফিতে মোড়া বাক্স। বলল “আজ তোর জন্মদিন…’। ব্যাস তারপর আর কিছু খেয়াল নেই। আরও বোধহয় অনেকদিন পরে একদিন ঘুম ভেঙে দেখি আমি এখানে। আমার সামনে ফুলটুল রাখা, বাড়ি থেকে কেউ না কেউ এসে দিয়ে গেছে। দিয়েও যায় রোজ। মরে গেছি, তাই রোজই আমার জন্মদিন!”

আমি বললাম “জানো ম্যাথু, আমাদের দেশে বলে যে মানুষ বারবার নতুন মানুষ হয়ে জন্মায়। তুমি হয়তো আবার কোথাও, কোনো পরিবারে জন্মাবে।”

ম্যাথু কিছু বলল না। তারপর যেই আমি যাবার জন্য পা বাড়িয়েছি, ম্যাথু বলল “শোন, একটা কথা বলি তোমাকে? তুমি অবশ্য আমার থেকে বয়সে অনেক বড় তবু আমি চারিদিক দেখতে দেখতে কিছু শিখেছি। ভাবছিলাম তোমাকে বলি, যদি তোমার মনটা একটু ভালো হয়”

ছবির দিকে এক পা এগিয়ে গিয়ে বললাম “বল, নিশ্চয় শুনব”

“জানো বন্ধু, এই যে আমি মরে গিয়েছি তাতে কিন্তু কোথাও কিছু পাল্টায়নি। সেই আগের মতোই শীতের পর বসন্তকাল এসেছে। ফুল ফুটেছে। আকাশ ঘন নীল, থেকে থেকে মহাসাগরের বাতাস বয়ে যাচ্ছে। আমার বন্ধুরা, আমার বাড়ির লোকেরা আমাকে মনে রেখেছে ঠিকই, তবে সকলেই নিজের নিজের কাজে ফিরে গেছে। আমার জন্য কেউ বসে নেই। সত্যি আমার জন্য কেউ বসে নেই স…ত্যি… ওই দেখ আকাশে …”

বিকট আওয়াজে কানে তালা লেগে গেল। দুটো জেট প্লেন বেশ নিচু দিয়ে উড়ে গেল একসঙ্গে। ম্যাথু বলল “ওগুলো নৌসেনার উড়োজাহাজ। আমি কত উড়েছি। আমার বন্ধুরা চালাচ্ছে। আমি চিনি ওদের। আমাকে সকলে কী যে ভালোবাসতো, কিন্তু দেখ কাজ ওরা করে চলেছে, কাজ ছাড়লে তো চলে না...

“তাই বলছিলাম কী বন্ধু – তুমিও তোমার যা কাজ করার আছে তা করতে থাকো। পৃথিবীর নিয়ম কী জানো? যা হয় তা হয়। যা হচ্ছে তা হচ্ছে। যা হবার তা হবে। আমাদের কাজ কাজ করে যাওয়া। তবে কখনো ভাবতে বসো না যে এ কাজটা করছি বলে এটা হবে, ওটা পাবো। কী থেকে কী হয় তা সঠিক কেউ জানে না। ওসব প্রত্যাশায় নিজেকে জড়িয়ে না ফেলাই ভালো। এটাই সার কথা বন্ধু।”

দেড়টা বেজে গেছে, রদ্দুর কড়া হচ্ছে। আমি একটা হালকা সোয়েটার পরে বেরিয়েছিলাম, ওটা খুলে হাতে ঝুলিয়ে নিলাম। ম্যাথু বলে উঠল “ইস, তুমি দেখছি ক্লান্ত হয়ে পড়েছ। আরো কিছুটা হাঁটতে হবে যে তোমাকে। ইচ্ছে করছে মোটর-সাইকেলে বসিয়ে তোমাকে বাড়ি পৌঁছে দিয়ে আসি”

আমি বললাম “বেশি দূর তো নয়, আমি বাড়ি পৌঁছে যাব। তবে ম্যাথু ভাই, একটা কথা বলি তোমাকে। তুমি আজ যা শেখালে তা দিয়ে আর যেটুকু রাস্তা আমার বাকি রয়েছে সেটুকু হেঁটে পার হয়ে যেতে পারব।”






0 comments: