Next
Previous
0

সম্পাদকীয়

Posted in

সম্পাদকীয়



'শব্দকে লুকিয়ে রেখে শব্দেরই তাজ্জব এই খেলা
গোধূলিবেলায়
যে লোকটা দেখিয়ে স্মিত হেসে 
পর্দার আড়ালে চলে যায়, 
তাকে গুরু মানি। 

কিন্তু একইসঙ্গে এও জানি,
এ-খেলা জীবনে কেউ তিনবার দেখে না। 
একবার সে দেখে তার শৈশবদিবসে
আরবার গোধূলিবেলায়
যখন সে আকাশে তার ক্লান্ত চোখ রাখে। 

সম্ভবত মহাকাশ তারই জন্য আঁকে
অনন্ত ইঙ্গিত ভরা নিশীথির স্থির চিত্রখানি।' [নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী] 


শব্দের আড়ালে শব্দের অনন্ত বিস্তারকে ছুঁতে চায় ঋতবাক। বিভিন্ন সংখ্যায় বিভিন্নভাবে। শব্দের নানান খাঁজ থেকে নিঃসৃত নানা রঙের বোধের আলকধারায় আশিরনখ ভিজিয়ে পবিত্র হতে চায়। ঋতবাক জানে, সাহিত্যের প্রথম পাঠ আমরা নিই শৈশবে। সোনার ঘটের মুখ সরিয়ে শব্দ দিয়ে ঢাকা সত্য অল্প হাসেন আমাদের পানে চেয়ে। তারপর, যা দেখেছি, তাকে আখর বাঁধনে বাঁধার চেষ্টা আমরা করে চলি জীবনভোর। ছোটদের জন্য লেখা সাহিত্য বাণীদেউলের সিঁড়ির প্রথম ধাপ। কিন্তু, এই লেখা ছাপান বড়রা, লেখেন বড়রা, কিনে দেন বড়রা। আর গোলটা বাধে এখানেই। বড়রা ধরে নেন ছোটদের তাই ভালো লাগে যা বাজারি আর মচমচে। একবার আশপাশে চেয়ে দেখুন। বাঁধা গতে ফেলা, চটজলদি ভালোলাগার উপকরণে তৈরি, একই জাতীয় লেখা হয়ে চলেছে বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্যে। অবিকল জাঙ্ক ফুডের মতো। অথচ, ভাত, কয়েক টুকরো মাংস, ভাজা পেঁয়াজ মিশিয়ে, নাড়াচাড়া করে, ক্যাওড়া জল ছড়িয়ে, খেতে দিলেই, আজও সোনামুখ করে খেয়ে নেয় ছেলেমেয়েরা। মানে, শুধু ইচ্ছে আর সৃষ্টিশীলতা চাই। পৌনপৌনিকতা নয়। এই কারণেই ঋতবাক, চতুর্থ বর্ষ, প্রথম সংখ্যায় আরম্ভ হয়েছিল শিশু-কিশোর বিভাগ। আর, দ্বিতীয় সংখ্যা, যা আমাদের পুজো সংখ্যাও, সম্পূর্ণভাবে শিশু-কিশোর সংখ্যা হিসেবে গড়ে তোলা হলো। ঋতবাকের প্রথম শিশু-কিশোর সংখ্যা। এ দায়টা নিতেই হলো। ভৌতিক কাহিনী, রূপকথা, কল্পবিজ্ঞান, কবিতা, ভ্রমণকাহিনী, প্রবন্ধ, কুইজ, মুক্তগদ্য, বইপত্তরের খবর সবই রইল। আর তার সঙ্গে রইল সিনসিয়ারিটি। ছোটদের জন্য না লিখলে কলম শুদ্ধ হয় না : এই বিশ্বাস।

এই সংখ্যায় ধারাবাহিকগুলো বেরোবে না। আবার পরের সংখ্যা থেকে বেরোবে। এছাড়া, এই সংখ্যা সম্পাদনার দায়িত্বে আছেন, অতিথি সম্পাদক সুস্মিতা কুণ্ডু। ভাবছি, এখন থেকে মাঝে মাঝেই বিশেষ সংখ্যা বার করে, নবীন প্রতিভাদের হাতে তার ভার ছেড়ে দেব। বাক্ এর কাছে, ঋতের কাছে দায়বদ্ধতা থেকেই এই কাজ করতে হবে। 

শুভকামনা নিরন্তর।