Next
Previous
0

সম্পাদকীয়

Posted in



একজন কবি এক বিপ্লবীর হত্যার প্রতিক্রিয়ায় লিখেছিলেন, 'চে, তোমার মৃত্যু আমাকে অপরাধী করে দেয়'। লিখেছিলেন, 'আমারও কথা ছিল হাতিয়ার নিয়ে তোমার পাশে দাঁড়াবার'। সশস্ত্র বিপ্লবের প্রতি সমর্থন কবিতাটির ছত্রে ছত্রে। রাষ্ট্রশক্তি, যা কখনও, কোনও কালে বিপ্লবের হাত ধরতে পারে না, দমন এবং নিপীড়নই কেবল করতে পারে, দ্বিধাহীনভাবে তার বিরোধিতা করেছিলেন সেই কবি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হাতিয়ার কিন্তু তিনি তুলে নিতে পারেননি। দ্ব্যর্থহীন উচ্চারণে তাঁর ব্যর্থতা ঘোষণা করেছিলেন।

সময়টা ছিল ১৯৬৭-র পরবর্তী। বলিভিয়ার জঙ্গলে চে গেভারার শরীরকে রাষ্ট্রের বুলেট ছিন্নভিন্ন করে দেওয়ার পর সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন লাইনগুলি।

প্রায় ষাট বছর পর দেখা গেল হাতিয়ার তুলে নিলেন সত্তরোর্ধ এক কবি। সম্প্রতি স্লোভাকিয়ার প্রধানমন্ত্রী রবার্ট ফিকোর শরীরে নির্ভুল নিশানায় নিজের লাইসেন্সড রিভলবার থেকে পাঁচ - পাঁচটি বুলেট পাঠিয়ে দিলেন ইউরায়ি জিন্টুয়া, যিনি কবি হিসাবে সেদেশে সুপরিচিত। অতীতে বিশ্বব্যাপী দক্ষিণপন্থী আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে বারবার সোচ্চার হয়েছেন তিনি। বাকি সব রাস্তা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে আসছে বলেই কি আগুনের জবাব আগুন দিয়েই দিতে চাইলেন জিন্টুয়া? তাঁর জীবনের যাবতীয় লিখিত শব্দ যে বার্তাটি পৌঁছে দিতে পারেনি, ওই পাঁচটি বুলেট যে সেই কাজটি সম্পূর্ণ করতে পারলো, এমন ভাবা হয়ত একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে, কিন্তু এক কবি কোনও একদিন যা করতে চেয়েছিলেন, যা না করতে পারা জন্ম দিয়েছিল অবিস্মরণীয় কয়েকটি পংক্তির, সেই অসম্পূর্ণ কর্মটিই যেন নতুন এক মাত্রা পেল এই ঘটনায়।

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা নিরন্তর।