0

ধারাবাহিক - সুদীপ ঘোষাল

Posted in





ষোলো

রবিবাবুর স্ত্রী আলো ভাবেন, এই তো কয়েকদিন আগে কলেজে রবির সঙ্গে পরিচয়। প্রথম দেখাতেই ভালোলাগা। আর এই ভালোলাগা টেনে নিয়ে গেছিলো তাদের কলকাতা চিড়িয়াখানা, ভিক্টোরিয়া,বইমেলা, মিনার্ভা, কফি হাউস। তাদের দুজনের কবিতার বই আছে। কত আকুতি মেশানো প্রেমের কবিতা। তখন কি আর মনে ছিলো কর্কট রোগে কবিতা আবার নতুন করে জন্ম দেবে।

আজ আলো খোলা চুলে ছাদে গিয়ে রোদে বসে খাতা কলম নিয়ে কবিতা লিখতে বসেছে। রবিবাবু আড়াল থেকে দেখে চোখের জল ফেলতে ফেলতে আপন মনে বলে উঠলো, আমি যেন তোমার আগে মরতে পারি রত্না। তোমার কবিতা শোনার পরে তৃপ্ত হৃদয়ে আমি মরতে চাই।

নিচে বড়ছেলের চিৎকার শোনা গেলো, মা গো তুমি কোথায়? একবার নিচে এসো। এখনি আমরা কলকাতা নার্সিং হোমে যাবো। আজ ফার্স্ট কেমো নেওয়ার দিন.।তারপর চলল,বিরাট ল

আলো দেবি মারা গেলেন। রবিবাবু আলোছাড়া বাঁচতে চান না।

একদিন তিনিও পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন।

প্রবাহ চলছে।বড়ছেলে ও ছোটছেলের বিয়ে হল।তাদের পুত্র, কন্যা হল।আবার শুরু হল নব প্রজন্মের নবপ্রবাহ।

(লেখক বিজয়ের জীবনপ্রবাহ ও সন্তানলাভ।)

বিজয় লেখক।চাকরী করে একটা প্রাইভেট ফার্মে। যখনই তার লেখা কোনো ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয় সে রেলওয়ে স্টেশনের স্টলে গিয়ে ম্যাগাজিনটি কিনে বাড়ি ফেরে।কিন্তু রেলওয়ে স্টেশনে ঢুৃকতে গেলে প্ল্যাটফরম টিকিট কেটে ঢুকতে হয়।এখন দশ টাকা লাগে একটা প্ল্যাটফরম টিকিটে।খুব গায়ে লাগে বিজয়ের।কিন্তু কিছু করার নেই। টিকিট না থাকলে আবার টিকিট চেকার ফাইন করতে পারেন। অতএব টিকিট নিয়ে স্টেশনে ঢোকাই উচিত বলে মনে করলো বিজয়।আজ থার্ড আই পত্রিকায় বিজয়ের একটা লেখা প্রকাশিত হয়েছে।খুব আনন্দিত হয়ে সে তার বন্ধু সুমনকে বললো,তুই একটু দাঁড়া, আমি প্ল্যাটফরম টিকিট কেটে বইটা নিয়ে আসি।

শুনে সুমন বললো,আরে প্ল্যাটফরম টিকিটের দাম দশটাকা। তুই দাঁইহাটের টিকিট নিলে পাঁচ টাকায় পাবি। একটা টিকিট থাকলেই হলো।

বিজয় বললো,এটা তো জানা ছিলো না। তাহলে এত দিন ধরে আমার অনেক টাকা সেভ হতো।

ঠিক আছে তাই হবে।তোকে অনেক ধন্যবাদ।

----বন্ধুকে, শালা ধন্যবাদ জানানোর কি আছে?যা, তাড়াতাড়ি যা।একসঙ্গে বাড়ি যাবো।

তারপর বিজয় একটা দাঁইহাটের টিকিট কেটে ম্যাগাজিন কিনে মহানন্দে বাড়ি চলে এলো। বন্ধুও তার বাড়ি চলে গেলো।

বাড়িতে এসেই বিজয় বৌকে বললো,বেশ ভালো করে আদা দিয়ে চা করো তো। একটু রসিয়ে সব গল্পগুলো পড়বো।বিজয় ভালো করে বিছানায় বসলো।

0 comments: