Next
Previous
0

সম্পাদকীয়

Posted in



সম্পাদকীয়


হলুদ বরন মেখলায় তার যৌবন উছলায় 
লাল ওড়নার আড়াল দিয়া চক্ষু দুটি চায় 
খোঁপায় টগর ময়না বুঝি আমায় খুঁজে হায় 
বসন্তে এ বিহুর লগন উত্তাল হয়ি যায়...

'হয়তো ফুটেনি ফুল রবীন্দ্রসঙ্গীতে যত আছে, হয়তো গাহেনি পাখি অন্তর উদাস করা সুরে বনের কুসুমগুলি ঘিরে। আকাশে মেলিয়া আঁখি তবুও ফুটেছে জবা, দূরন্ত শিমুল গাছে গাছে, তার তলে ভালোবেসে বসে আছে বসন্ত পথিক'               - নির্মলেন্দু গুণ

বসন্ত মানেই অকারণের সুখ, বসন্ত মানেই সাজিয়ে তোলা বিরহ বেদনা!

আজ দোল পূর্ণিমা, বসন্তোৎসব। 
সূর্য-ঘড়ি সাত সকালে, ফাগুন রাঙ্গা শাড়ি পরে দিন গোনে আজ কার? 
বাসন্তিরা সবুজ টিপে, লাল সাদা আর হলুদ পাড়ে হাত ধরেছে তার

খুব ছোটোবেলায় মনে পড়ে, দোলের দিন সকালবেলা আমাদের বড়ো বাড়ীর উঠোনে নাচ গান হতো। বাসন্তী-রঙা লাল-পাড় শাড়ী গাছকোমর করে পরিয়ে দিতো মা। হাতে গলায় পলাশ ফুলের গয়না। দিদিদের পিছু পিছু আমিও নাচতুম... 
ও চাঁপা, ও করবী...তোরে ক্ষণে ক্ষণে চমক লাগে 

আবীর - ফুটকড়াই - মঠ...

যখন সদ্য কিশোরীবেলা, আমার এক নীরব প্রেমিক, ধরুন তারও নাম 'উত্তীয়' , নিউ আলিপুর থেকে একটা পুরনো রঙ-চটা জামা গায়ে চড়িয়ে হাঁটতে হাঁটতে আসতো আমাদের ভবাণীপুরের বাড়ীতে - সবার চোখের আড়ালে গালে কপালে এক ফোঁটা আবীর ছোঁয়াবে বলে!

'অনেক আশ্চর্য কথা বলেছি তার কানে, 
হৃদয়ের কতটুকু মানে
তবু সে-কথায় ধরে!!' - প্রেমেন্দ্র মিত্র

আর একটু বড়ো হয়ে, অনেক বছর এই দিনটা আত্মীয়-পরিজন, বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে কাটিয়েছি শান্তিনিকেতনে। 

তখন সবকিছু ছিলো অন্যরকম। কত রঙ ছিলো, কত উচ্ছ্বলতা, কত উজ্জ্বলতা! 

জীবনের মধ্যাহ্নবেলায় এসে মনে হয় - স্মরণের তুলিতেই কবিত্বের রঙ ফোটে ভালো। 

তাই বলি, এত কথার দরকার কিসের? থাক পড়ে আর সব কথা, শুধু একরাশ বাসন্তী শুভেচ্ছা