প্রবন্ধ - অনিন্দিতা মণ্ডল
Posted in প্রবন্ধমাতৃমূর্তি আমাদের মনে একরকমের স্নেহার্দ্র ভালোবাসার জন্ম দেয়। মা হতে এই দেহ। দেহের মধ্যে মন ও চেতনারূপ প্রাণ। দেহই আধার। মা তাই আধাররূপিণী। এই দেহ আধারে ঈশ্বরীয় আনন্দ তো বটেই, সঙ্গে সংসারের নানারূপ সুখ দুঃখ শোক তাপ সব কিছুই ভোগ হয়। মা আমাদের দেহে সেই শক্তির সঞ্চার করেন। আমরা সেই শক্তিতে কর্ম করি, সংসারের জ্বালা ভোগ করি। আবার কখনও সেই পরমাপ্রকৃতির কৃপায় পরমানন্দ ভোগ করি। আজ যে দুর্গাপুজার ঘনঘটা চারিদিকে, সেই আরাধনার এমন জাঁকজমক হয়ত বেশিদিনের নয়, কিন্তু পুজার আর্তি বহুকালের। ভালোবাসার আর স্নেহ পাওয়ার আর্তি বহুকালের। তাই ফিরে ফিরে চাই, কবে মৃণ্ময়ী আসবেন আর তাঁর কাছে দুদণ্ড বসে শান্তি পাবো।
শক্তির যে রূপটি আমরা বঙ্গসংস্কৃতির ধারক করেছি সেটি এই আশ্বিনের ভরা স্রোতস্বিনী, সুনীল আকাশ আর শ্যামল প্রান্তরের মধ্যে প্রকৃতির আনন্দময়ী রূপের মধ্যে পেয়েছিলাম নিশ্চয়। নইলে শাকম্ভরী মূর্তির মধ্যে চরাচরের সেই জগজ্জননীকে খুঁজে পেলাম কি করে? কি করেই বা সপরিবার সবাহন দুর্গা বা উমার মধ্যে আমরা আমাদের চিরকালীন পারিবারিক আবহটি খুঁজে চলি?
একটু প্রাচীন সূত্র ঘেঁটে দেখি। কতদিনের এই দেবী আবাহন প্রথা? বৈদিক যুগেও আমরা দেবী আরাধনার দুয়েকটি সূত্র পেয়েছি। ঋগ্বেদীয় দেবীসূক্তে দেখতে পাচ্ছি মহর্ষি অম্ভৃণের কন্যা বাক। যিনি পরবর্তীতে সরস্বতী নামে অভিহিত হচ্ছেন। তিনি মন্ত্রদ্রষ্টা। উল্লেখ আছে, বাক পরাশক্তিকে আপন আত্মারুপে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। অতএব, বাক আত্মজ্ঞান বা ব্রহ্মজ্ঞান লাভ করেছিলেন। ফলে এই নারী ব্রহ্মরূপিণী হলেন। সেই অপরোক্ষ অনুভূতিতে ঋদ্ধ হয়ে তিনি এই অপূর্ব দেবীসূক্ত আবৃত্তি করেছিলেন। সেই সূক্তে তিনি নিজের সঙ্গে জগতের সমস্ত চেতন ও জড়বস্তুর একত্ব অনুভূতি ব্যক্ত করেন। তাঁর মনে হয় এ জগতের যা কিছু সব তিনি। সূক্তটি পড়তে পড়তে অদূর অতীতের এক মহামানবের কথা স্মৃতিতে জাগে। “মা আমার জগত জুড়ে। যেখানে যত স্ত্রী আছে, সব সেই মহামায়ার অংশ”(শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস)। বাক নিজের যে অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করেছিলেন তা অনন্য। আর তাই বাক এই শব্দে আমরা ব্রহ্মাণীকে বুঝি। শূন্য থেকে নাদে প্রকাশ হল। এই সৃষ্টির আদি। যেমন, আমাদের চিন্তায় জন্ম নেয় ভাবীকাল। তারপর সেই থেকে সূক্ষ্মজন্ম ঘটে যায়। এর অনেক পর স্থুল জন্ম ঘটে। শ্রীরামকৃষ্ণদেব দক্ষিণেশ্বরের কুঠির ছাতে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বিলাপ করছেন। কার সঙ্গে তাঁর জীবন কাটবে? তাঁর অন্তরঙ্গ ভক্তরা কই? এর প্রায় বিশ বছর পর সবাই একে একে আসতে শুরু করল। তিনি বললেন, ওই কান্না যখন কেঁদেছি তখনই সূক্ষ্মভাবে সব জন্মেছে। আর তারপর স্থুলে জন্মে এতদিনে কাছে এসেছে। তাই সরস্বতী বা বাক দেবীই সৃষ্টিদাত্রী। সত্বগুণস্বরূপিণী।
বৈদিক সাহিত্যে আর একজন দেবীর কথা পাই। তিনি হলেন শ্রী। শ্রীসূক্তে আছে তাঁর কথা। তিনি প্রধানত কৃষি ও সম্পদের দেবী। তাঁকে গবাদিবহুপশুসমৃদ্ধা বলেও অভিহিত করা হচ্ছে। এর অর্থ, তিনি সংসারের সুখ শান্তি দায়িকা। স্থিতির দেবী। রজোগুণময়ী। আমাদের নিত্যদিনের সুখ দুঃখের দেবী। আধুনিক কালে আমরা যাকে লক্ষ্মী বলে চিনি। শ্রীসূক্তে দেবীর রূপ স্পষ্ট। তিনি সুবর্ণরজতমাল্যধারিণী, হিরন্যবর্ণা, হিরন্যময়ী। জাগতিক কারণে আমাদের সোনারূপো চাই বই কি!
সৃষ্টি ও স্থিতির পর অবশ্যম্ভাবীভাবে আসে সংহার। সংহারের ঈশ্বরী দুর্গা। তিনি রুদ্ররূপ ধারণ করে সংহার করেন। সংহার করেন পাপসম্ভব অসুরকে। তিনি তমোগুণময়ী। নীচের শ্লোকটি পাই তৈত্তিরীয় আরণ্যকে।
তামগ্নিবর্ণাং তপসা জ্বলন্তীং বৈরোচনীং কর্মফলেষু জুষ্টাম্।
দুর্গাং দেবীং শরণমহং প্রপদ্যে সুতরসি তরসে নমঃ সুতরসি তরসে নমঃ।
(তৈত্তিরীয় আরণ্যক ১০।১।৬৫)
আজকের দেবী দুর্গার প্রথম নামোল্লেখ এই তৈত্তিরীয় আরণ্যকে। বৈদিক সাহিত্যে এই প্রথম তাঁকে পাওয়া গেলো। উক্ত শ্লোকের অর্থটি এরকম- যিনি অগ্নিবর্ণা, যিনি তপস্যার দ্বারা জ্যোতির্ময়ী, যিনি বৈরোচনী, কর্মফলের নিমিত্ত যিনি উপাসিতা, সেই দেবী দুর্গার শরণ নিলাম।
এই সংহারমূর্তি দেবীকে আমরা কেন পূজা করি? কারণ তিনি আমাদের পাপনাশ করেন। এই দেহে জাত সমস্ত কলুষ হরণ করেন কলুষহারিণী দেবী। এই তিনটি দেবী মূর্তি প্রকৃতপক্ষে একই শক্তিময়ীর তিনটি পৃথক রূপ। মা যখন জন্ম দেন তখন তিনি বাক বা সরস্বতী। যখন সন্তানকে পালন করেন তখন তিনি শ্রী বা লক্ষ্মী। আর যখন কলুষ নাশ করেন তখন তিনি দুর্গা। এই ভাবেই আমাদের কল্পনায় মাকে আমরা গড়ে নিয়েছি।
কিন্তু এই রূপের অন্তরে অরূপটি কি? রূপসাগরে ডুব দিলে অরূপ রতনের আশা থেকে যায় বৈকি! বিশেষ, ভারতীয় অধ্যাত্ম দর্শনের মূল লক্ষ্যই হল, সেই অরূপের উপলব্ধি। যাকে আমরা চেতনার গভীরে অনাবিল আনন্দে অনুভব করি। তবে এই মাতৃমূর্তির আরাধনার মধ্যে দিয়ে আমরা কি সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি? সেই মহামানব বলেছিলেন- মৃন্ময় আধারে চিন্ময়ী দেবী। অর্থাৎ এ দেহ মৃন্ময়। পঞ্চভুতে তৈরি। সেই মৃন্ময় আধারে চেতনরূপিণী চিন্ময়ী। তাঁকে আমরা অন্তরে পাবো ঠিক তেমনি। তিনি আমাদের সংসারে জন্ম দিয়ে পালন করে অবশেষে সংহারকালে এই সংসার ভবার্ণব থেকে মুক্তি দেন। আর তখন তিনি ত্রিগুণময়ী থেকে, ত্রিগুণাত্মিকা থেকে ত্রিগুণহরা। পরাৎপরা। কিন্তু যতক্ষণ দেহ আছে ততক্ষণ সংসার আছে, কারণ এই দেহটাকে তো খেতে পরতে দিতে হয়! তখন মা সগুণময়ী। শেষে সেই পরম উপলব্ধির কালে কোনও গুণই থাকেনা। দেহ সব গুণের অতীত হলে তবেই সেই উপলব্ধি ঘটে। আর সেটি হয় মায়ের কৃপায়।
যদিও পরমকে প্রকৃতি বা স্ত্রীরূপে পূজা আমাদের বৈদিক সভ্যতার পরিপন্থী। কারণ বেদে পিতার কথাই বারবার বলা হয়েছে। পুরুষসূক্ত শুধু পুরুষের উত্তরণের কথা। নারী সেখানে তাঁর পার্শ্ববর্তিনী মাত্র। এবং শেষে নারী পাশ থেকেও সরে যায়। মহামানব বলছেন- মহামায়া দ্বার খুলে না দিলে ব্রহ্মজ্ঞান হয়না। মা তবে দুয়ার খুলে দিয়ে কি করেন? সরে যান। ব্রহ্ম পুরুষ কিনা! কিন্তু আমাদের মন মানে কই? মা বিনা চলেনা। তাই মা থাকেন। কেমন করে? মা পরিবর্তিত হন পরমে। শক্তি ব্রহ্মে পরিবর্তিত হন। মহাপুরুষ বলছেন- তোমরা যাকে ব্রহ্ম বলো, আমি তাকেই মা বলে কই। ‘ম’ মানে ঈশ্বর। ‘ম’ এ আকার দিলে ‘মা’। সাকার ঈশ্বরই হলেন ‘মা’। তাই মা বলতে আমরা ঈশ্বরের সগুণ রূপময় অস্তিত্বকে বুঝি। যাকে আঁকড়ে ধরা যায়। সেই চেতনময়ীই আমাদের অন্তরের সাধনার ধন।
সৃষ্টির বীজ মা তুলে রাখেন। জগত সৃষ্টি করেন, আমাদের এই দেহ সৃষ্টি করেন শুধু নয়, দেহের অভ্যন্তরে ঈশ্বরীয় স্ফুরণের জন্মও হয় মায়ের জন্য। মহামানব বলছেন- “গিন্নিদের একখানা ন্যাতাকাঁতার হাঁড়ি থাকেনা? তাইতে মা নীলবড়ি, শসাবিচি, সৃষ্টির বীজসকল তুলে রেখে দেন”। তারপর সময় হলে আবার তাই থেকে এই জগত সৃষ্টি করেন। এই এত বড় জগত মা সৃষ্টি করেন অথচ আমরা একযোগে তা প্রত্যক্ষ করতে পারিনা? তাহলে এই কথার যৌগিক অর্থটি বরং স্পষ্ট হোক। মা আমাকে সৃষ্টি করেন। দেহ জন্মালে তাইতে ‘আমি’ ও জন্মায়। সেই ‘আমি’ তারপর দেহের শক্তিতেই পালিত হয়। স্থিতি। শেষে দেহের শক্তিই তাকে নাশ করে। মৃত্যুমুখে ঠেলে দেয়। এই দেহের নাশ মানেই ‘আমি’র নাশ। এটি বাহ্যিক। আন্তরিক অর্থ, দেহের মধ্যে আত্মার প্রথম স্ফুরণে ‘আত্মা আমি’র জন্ম। তারপর বহুকাল ধরে নানাবিধ দর্শন ও অনুভূতির মাধ্যমে দেহস্থ চেতনা সেই ‘আমি’কে পূর্ণতা দেয়। স্থিতি। এবং শেষে আত্মার দর্শন ও ঈশ্বর লাভ। সপ্তমভূমিতে যখন এই অনুভূতি কেউ লাভ করেন তখন তাঁর দেহস্থ চৈতন্য সংকলিত হয়ে মস্তিষ্কের সহস্রারে আত্মারূপে দৃষ্ট হয়। ‘আমি’র এই শ্রেষ্ঠ বিকাশ। এরপরে “একুশদিন মাত্র দেহটি থাকে। মুখে জল দিলে গড়িয়ে যায়” – শ্রীরামকৃষ্ণদেব। সমাহিত ব্যক্তি একুশদিন পর্যন্ত বাঁচতে পারেন। তার বেশি নয়। তাই প্রয়োজন ফুরলে মা দেহটি ভেঙে দেন। প্রয়োজনে আবার দেহ সৃষ্টি করেন।
আমাদের বাংলায় দুর্গাকে আমরা ঘরের মেয়ে বলে আদর করি। শরতের নির্মল পরিবেশে সে আসে তার পরিবার নিয়ে বাপের বাড়িতে। ‘উমা’ বলে ডাকি তাকে। এই ‘উমা’ নামটি প্রচলিত হয়েছে মহাভারতের সময় থেকে। মহাভারতের শান্তিপর্বে দক্ষ রাজার যজ্ঞের উল্লেখ আছে। সেই শিবহীন যজ্ঞে উমা ক্রুদ্ধ হন। তাঁর ক্রোধ উপশমের জন্য শিব সেখানে যান। সেই বহুল প্রচলিত কাহিনীর শেষ আমরা প্রত্যেকেই জানি। এই সূত্র ধরে দেখে নিই মহাভারতে যুধিষ্ঠিরের দুর্গাপুজার প্রসঙ্গটি। বিরাট পর্বের ষষ্ঠ অধ্যায়ে বিরাট নগরে অজ্ঞাতবাসে যাবার সময় যুধিষ্ঠির দেবী দুর্গা বা উমাকে স্তব করে প্রসন্ন করছেন। স্তবে তিনি তাঁকে আরও নানা নামের সঙ্গে বাসুদেব ভগিনী বলে অভিহিত করছেন। আমাদের মনে পড়ে যায়, কংসের কারাগারে কৃষ্ণের জন্মের আগে জন্মেছেন মহামায়া। সেই শিশুকন্যাকে পাথরে ছুঁড়ে হত্যা করছেন কংস। কিন্তু মহামায়া যে মৃত্যুর পারে! যুধিষ্ঠির ভাইদের সঙ্গে একত্রে আরাধনা করে দেবীর দর্শন চাইছেন। কারণ তিনি দুর্গমেতে দুঃখহরা। তিনি দুর্গতিনাশিনী। পাণ্ডবদের দুর্গতির কথা আর কত বলা যায়! সারাটা জীবন তাঁদের বিপদ মাথায় নিয়ে কেটেছে। তাই দুর্গা বিনে গতি নেই তাঁদের। তিনি বলছেন- ব্রহ্মাদি প্রাচীনেরা তোমার স্মরণ করে তোমার কাছে বর পেয়েছেন। ভারমোচনের জন্য যেসব তোমাকে স্মরণ করে, যারা প্রাতে উঠে তোমাকে স্মরণ করে তাদের কাছে স্ত্রী পুত্র ধন সম্পদ কিছুই দুর্লভ নয়। দুর্গতি থেকে ত্রান করো বলে লোকে তোমাকে দুর্গা বলে। দুর্গম পথে অবসন্ন মানুষের তুমি পরমা গতি। রাজ্যভ্রষ্ট আমি তোমার শরণ নিলাম। আমাকে ত্রাণ করো। আমাকে আশ্রয় দাও। সুতরাং যুধিষ্ঠির সপরিবারে দুর্গার শরণ নিচ্ছেন, যাতে মা তাঁকে এই মহা বিপদ থেকে রক্ষা করেন। এই জাগতিক দুর্গতি বিনে আরও একরকমের দুর্গতির কথা আছে। সেটি থেকে মুক্তি চাইতেও তো দুর্গা! আমরা যখন দেহে বদ্ধ হয়ে নিজের স্বরূপ ভুলে মোহে আচ্ছন্ন হই আর নানা ভোগে ডুবে ভুলে থাকি, তখন সেই দুর্গতি থেকেও তো মা ত্রাণ করেন!
ভীষ্মপর্বে অর্জুনও স্তব করছেন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের আগে। শত্রু নাশের জন্য তিনি শক্তি চাইছেন মায়ের কাছে। কিন্তু এই স্তবে যত না তিনি শক্তি কামনা করেছেন তার চেয়ে বেশি তিনি মায়ের মাধুর্যে, ঐশ্বর্যে মুগ্ধ হয়ে তাঁর অর্চনা করেছেন। বলছেন- আমি বিশুদ্ধ অন্তরে তোমার স্তব করছি যে তোমার প্রসাদে যুদ্ধে আমার জয়লাভ হোক। এরপরে বলছেন- আত্মবিবেকরূপ সমাধিতে সিদ্ধচারণগণ তমাকেই দর্শন করেন। এ কিরকম? যে মাতা আমাকে শত্রুনাশের শক্তি দবেন, অবশ্যই সে শক্তি পেশী শক্তি, সেই মাতাই আবার সিদ্ধচারণদের সমাধিতে দর্শন দেবেন! কেমন বিপরীত ভাবের কথা যেন?
প্রকৃতপক্ষে এই কথার যৌগিক অর্থ না উপলব্ধি করলে স্তবটি অদ্ভুত লাগবে। শত্রু বাইরে থেকে আসেনা। সাধনার যা বিঘ্ন, সেই সব জাগতিক কামনা বাসনা ও কাম ক্রোধ লোভ মোহাদি ছয় রিপুই তো শত্রু! সেই শত্রুনাশেই মা সহায়। তিনি দেহকে এমন করে প্রস্তুত করবেন যে এই রিপুনিচয় নাশ হবে। আর তারপরে সেই শুদ্ধ দেহে আত্মিক বিকাশ হবে। সমাহিত সাধক দেখবেন মায়ের সেই নিত্যশুদ্ধবোধরূপ। সকল কামনার উর্দ্ধে শুধু ঈশ্বরীয় আনন্দের স্বতঃস্ফুরণ। সেই মাতৃমূর্তিই আমাদের সাধ্য। সেই চেতনময়ী মাই আমাদের ধারণ করে আছেন, আবার দর্শন দিয়ে মনুষ্য জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য সফল করবেন। তাই মহাভারতের কাল থেকে কিংবা তারও আগে থেকে আমরা ডেকে চলেছি আমাদের সেই মাকে। জগজ্জননী আমাদের স্নেহ থেকে বঞ্চিত না করেন।
[শারদীয়া এবং স্রোত ২০১৯]