Next
Previous
0

গল্প - ঝানকু সেনগুপ্ত

Posted in





সাবির আলীর রাতে ঘুম হয় না! সারারাত ছটফট করে! ঘুম আসে না! সেই ছোটবেলার কথা মনে হয়!

বৃষ্টির রাত! প্রচণ্ড ঝড়! নদীটা ফুলে ফেঁপে উঠেছে! ক্রমাগত বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে! ছোট্ট সাবিরের চোখের সামনে ওদের আমবাগানের চার পাঁচটা গাছ একটু হেলে গিয়ে বসে যেতে যেতে হঠাৎই অনেকটা মাটি নিয়ে ঝপাং করে ভাঙ্গনে তলিয়ে গেল! সাবির মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠল! গাজন আলী চিৎকার করে বলল- ‘ওরে ও আমিনা, সাবিররে লিয়ে বাজারের দিকি ছুইট্যে চলি যাও! আমি আইসছি! সাবির আলী ভয়ে দুটো হাত বাড়িয়ে আর্ত কান্নায় ডেকে উঠল- ‘আ-ব্বা-জান!’ মেঘের গর্জনে ছোট্ট শিশুর কান্না হারিয়ে গেল!

এমনি করেই প্রতিবছর ভাঙ্গন হয়! জমি যায়! ভিটে যায়! স্কুল বাড়ি, মসজিদ, মন্দির সব গঙ্গার গর্ভে চলে যায়! কোটি, কোটি টাকা ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য খরচা হয়! সব জলে যায়! শুধু মাফিয়া আর কনট্রাক্টরের পকেট ভরে! রাজনৈতিক নেতারা ভোটের সময় এসে আবার কয়েক কোটির গল্প বলে! তাতে ভাঙ্গন থামে না! গ্রামের পর গ্রাম, এই মুর্শিদাবাদ আর মালদায় হারিয়ে যায়! শুধু স্মৃতি ভেসে থাকে! সারারাত ভাঙ্গনের শব্দে সাবির আলীরা ছটফট করে! অ্যাডভান্সড অ্যাকাউন্টেন্সির ছাত্র সাবিরের ব্যালেন্স শীট মেলে না! সাবির আলীর আর একটা নাম হয় পরিযায়ী শ্রমিক!

পরিযায়ী সিকুউরিটি গার্ড! হাঃ হাঃ! নিজের মনেই হাসে সাবির আলী! শুধুই স্থানিক পরিবর্তন! হাওড়ার নার্সিং হোম থেকে ছত্তিসগড়ের রায়পুরে একটা হোটেল! তারপর সেখান থেকে ভিলাইয়ের এই ছোট্ট কোম্পানির সিকুইরিটি গার্ড! এখানকার ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেটে পর পর অনেক ছোট ছোট কোম্পানি! ভিলাই স্টিল প্ল্যান্টের উপর এই কোম্পানিগুলো নির্ভরশীল! সাবির আলীদের কোম্পানির নাম ‘কমলাক্ষ মেকানিক্স’। মালিক কমলাক্ষ ভট্টাচার্য।

রায়পুরে হোটেলে কোনও একদিন চেক আউট করার সময় ভট্টাচার্য বাবু একটি ৫০ টাকার নোট দিতে গেলে সাবির নিতে চায় না, বলে- “কিছু মনে করবেন না স্যার, আমি বিনা পরিশ্রমে টাকা নিতে চাই না! আবার আসবেন! নমস্কার!”

স্তম্ভিত ভট্টাচার্য বাবু টাকাটা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন কিছুক্ষন! তারপর বলেন- “তোমার, আই মিন, আপনার নাম?”

- “না-না, আপনি আমায় তুমি বলতেই পারেন, স্যার! আমি তো আপনার থেকে অনেক ছোট!”

ভট্টাচার্য বাবু একটু হাসেন!

- “আমার নাম সাবির আলী! বাবার পরিচয় ধরলে আমি মুসলমান! ব্যক্তিগত ভাবে আমি অবশ্য কোনও ধর্মীয় অনুশাসন মানি না!”

- “হিউমানিস্ট?”

- “এক্স্যাক্টলি, স্যার!”

- “বাড়ি কোথায়?”

- “আদি বাড়ি নদীগর্ভে! বর্তমানে, রঘুনাথগঞ্জ। মুর্শিদাবাদ।”

- “ন-দী গর্ভ?!”

- “মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলায় আমাদের পূর্বপুরুষের কয়েকশ বিঘা জমি, আমবাগান, পাটের ক্ষেত, দালান বাড়ি সব সবটাই গঙ্গার ভাঙ্গনে তলিয়ে গেছে! রঘুনাথগঞ্জের কাছে আমগাছি গ্রামে আমার ঠাকুর্দার বিঘা তিনেক জমি ছিল! আপাতত সেখানেই আমার বাবা সামান্য কিছু চাষ আবাদ করেন! আমিই একমাত্র ছেলে! এখন পরিযায়ী শ্রমিক! হাঃ-হাঃ!”

- “পরি-যা-য়ী শ্রমিক! হুম্‌!” ভট্টাচার্য বাবু কিছুক্ষন চুপ করে থাকেন! তারপর বলেন- “তোমার সাথে কথাবার্তা বলে মনে হচ্ছে তুমি কিছুটা পড়াশুনা করেছ!”

- “হ্যাঁ। ওই আর কী!” একটু অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে সাবির! বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে নামছে! ভিউ পয়েন্ট’ হোটেলের সিকুরিটি গার্ড সাবির আলী, নিজের দায়িত্বে সচেতন!

- “এক মিনিট স্যার! আলোগুলো জ্বালিয়ে নি!”

কমলাক্ষ ভট্টাচার্য শিবপুর বি.ই. কলেজের পাশ আউট! মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার! এই মুহুর্তে আরোপিত গাম্ভীর্য সরিয়ে সাবির আলীর সাথে গল্পে মশগুল! কমলাক্ষ বাবু একটা সিগারেট ধরান! কী মনে করে সাবিরকে বলেন- “কী সাবির, চলবে নাকি?”

- “না, স্যার! নেশা করার মতন বিলাসিতা আমাদের থাকতে নেই! হ্যাঁ, তবে মাঝে মাঝে আমার এখানকার বন্ধুদের, মানে ওই হোটেল বয়, কুক বা আমার পার্টনার আর একজন সিকিউরিটি গার্ড লোচনরামের থেকে ওদের বানানো খৈনি একটু আধটু খাই!”

- “হুম্‌! তা ভাল! তা, পড়াশুনো কতদূর করেছ বললে না তো?”

- ‘অ্যাডভান্সড একাউন্টেসি অনার্স নিয়ে সেকেন্ড ইয়ারে পড়ছিলাম। পার্ট ওয়ান পরীক্ষার ঠিক আগেই মা অসুস্থ হয়ে পড়ল! গলব্লাডারে স্টোন! মায়ের চিকিৎসা, ওষুধ, পথ্য! কলেজের ফিস’ অনেকটা বাকি পড়ে গিয়েছিল! আর পড়া হল না! ভিটেমাটির পরিযায়ী বাসিন্দা থেকে পরিযায়ী শ্রমিক - হাঃ হাঃ!

সাবির আলীর কান্না চাপা উদাত্ত হাসিটা কমলাক্ষ বাবুর কানে এসে প্রতিধ্বনিত হতে থাকল! ভিটেমাটির পরিযান! ভিটেমাটিও কখনো কখনো পরিযায়ী হয়- কথাটা সে ভাবে মনে হয় নি, কোনোদিন! কমলাক্ষ ভট্টাচার্যের পিতৃদেব বিরুপাক্ষ ভট্টাচার্যের আদি বাড়ি ছিল ঢাকা, বিক্রমপুর রাজাবাড়ির বাহেরক গ্রামে! সেই গ্রামটা পদ্মানদীর ভাঙ্গনে হারিয়ে গেল! তারপর ঢাকার কাছে ধানমুন্ডি! সেখান থেকে এপার বাংলায়, এই সোদপুরে! সে অর্থে কমলাক্ষ বাবুও তো আর এক ভাঙ্গনের শিকার!

সে রাতে, কি জানি, কেন, কমলাক্ষ বাবু ফিরে এসেছিলেন হোটেলে! পরের দিন সাবির আলীকে নিয়েই চলে এলেন ভিলাই! তারপর থেকে সাবির আলী, কমলাক্ষ মেকানিক্সের সিকিউরিটি গার্ড এবং পার্ট টাইম অ্যাকাউন্ট্যান্ট! সাধারন ক্যাশ বুক করতে সাবির আলীর কোনও অসুবিধে হত না! ইচ্ছে করলে ব্যালেন্সশীট’টাও তৈরি করতে পারত! তবুও ব্যালেন্সশীট’টা কমলাক্ষ বাবু ইনকাম ট্যাক্স কনসালটেন্ট’কে দিয়েই করিয়ে নেন!

সাবির আলীর ডিউটি ২৪*৭! সুতরাং কোম্পানির অফিস ঘরেই রাত কাটায়! ঘর ভাড়াটাও বেঁচে যায়! সব মিলিয়ে বেশ ভালোই কাটছিল সাবির আলীর! বাড়িতেও অনেকটা টাকা পাঠাতে পারছে! সামনের ইদে একবার বাড়ি যাবে সাবির!


(২)
ইদানিং সাবির আলীর বেশ কিছু বন্ধু জুটেছে! কেউ কেউ ওর মতনই সিকিউরিটি গার্ড! কেউ লেদ মেশিন চালায়। কেউ কাস্টিং করে! এছাড়াও ইলেকট্রিশিয়ান, ফিটার, কারপেন্টার, টার্নার, ওয়েল্ডার, শিট মেটাল ওয়ার্কার!

ভিলাই টাউনশিপ থেকে ওদের এই ইডাস্ট্রিয়াল এস্টেটে আসার রাস্তাটার নাম নন্দিনী রোড! ভিলাই পাওয়ার হাউজ থেকে নন্দিনী মাইন্সের দিকে সোজা নিচে নেমে গেছে! ডান দিকে পর পর বেশ কয়েকটা সিনেমা হল! এই অঞ্চলটির আর একটি নাম ক্যাম্প-টু!

এখানে বসন্ত টকিজের গেটম্যান বদ্রে আলমের সাথে সাবিরের বন্ধুত্বটা ঘটনাচক্রে একটু বেশীই! কারণটা ওদের ফেলে আসা জীবন! মালদাতে বদ্রে আলমের ভিটে বাড়িটাও গঙ্গার ভাঙ্গনে তলিয়ে গেছে! বদ্রে আলমের ডাক নাম বাচ্চু! বাচ্চু আলমের সাথে সাবির আলীর মাঝে মাঝে দেখা হয় এই ভিলাই ক্যাম্প-টু’র রাজা জামা মসজিদে। বাচ্চু আলম ধর্মপ্রান মুসলমান! ওর মতে আল্লাই ওকে দেখবে! বাচ্চু আলম সাবিরের থেকে দু-তিন বছরের বড়! কম বয়সেই বিয়ে হয়ে গেছে! ওর বৌয়ের উপরই মা-বাবার দায়িত্ব! বাচ্চুর বৌ রিজিয়া মালদার পঞ্চানন্দপুর গ্রামে একটা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা! এবার ইদের সময় বাড়ি যেতে পারে নি বাচ্ছু আলম! হঠাৎ করোনা অতিমারিতে লকডাউন!

কাজ বন্ধ! ট্রেন বন্ধ! বাস বন্ধ! সিনেমা হল বন্ধ! বিনোদন নেই! আড্ডা নেই! দোকান বন্ধ! বাজার বন্ধ! মানুষের মুখ বন্ধ! মন বন্ধ!

সিনেমা হলের সব কর্মীদের চাকরি গেল! শুধু পরে রইল বদ্রে আলম! সিকিউরিটি গার্ড! মালিক মাইনেটা অর্ধেক করে দিল! ডিউটি অর্ধেক করল না! দ্বিগুন করল!! লোকজন নেই! সুতরাং সাবধান! সবসময় পাহারা!

এই পাহারা দিতে দিতে কখন যেন মনটাকেও পাহারা দিতে শুরু করল বাচ্চু আলম!

মুসলিম মানেই পাকিস্থানের সমর্থক! দেশদ্রোহী! ম্লেচ্ছ! অপবিত্র! এখানে বেশির ভাগ মানুষেরই এটাই ধারণা!

সব মুসলমানই পাকিস্তান হওয়াটাকে মান্যতা দিয়েছিল! মুসলমান শাসকেরা হিন্দুদের মন্দির ভেঙ্গে দিয়েছিল! ভগবান রামের জন্মস্থানে মন্দির বানিয়েছিল! বাবরি মসজিদ! বাবরি মসজিদ ভেঙ্গেছি - বেশ করেছি! আরও ভাঙব! শালা মুসলিম!

কিন্তু বাচ্চু আলম তো কখনো এমন করে ভাবে নি! ওর বাপ-ঠাকুর্দার মুখেও এ ধরণের কথা শোনেনি! ওর এখনও মনে পড়ে ভাঙ্গনের আগে কালিয়াচকের কাকরবন্ধা ঝাউবনের পাশে আম বাগানে ওরা খেলত! বাঞ্জিতলা হাই স্কুলে যেবার ভর্তি হল, ২০০৫ সালে, সেবারই ওদের গ্রামটা গঙ্গার ভাঙ্গনে তলিয়ে গিয়েছিল! যাদের ভিটেমাটি হারিয়েছিল, বিঘের পর বিঘে চাষের জমি নদীতে তলিয়ে গিয়েছিল, তারা সবাই একসাথে বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করেছিল! বেশির ভাগ মুসলমান হলেও কিছু ঘর ছিল বর্ন হিন্দু! দু-তিন ঘর ব্রাহ্মণও ছিল! দুর্গাপুজো আর ইদে হিন্দু-মুসলমান সবাই একসাথেই তো আনন্দ করত! ওর এক বন্ধু ছিল আনন্দ! আনন্দ সেন! ওদের দুই বন্ধুকে একসাথে সবাই ডাকত বদ্রেআনন্দ!

এসব কথা ভাবতে ভাবতে বদ্রে আলমের ছোটবেলায় শোনা এক ফকিরের কথা মনে হত! ওই ফকিরকেই জিজ্ঞেস করেছিল- “ফকির কথার মানে কী ফকির?”

ফকির কিছুক্ষন চুপ করে রইলেন! তারপর চোখ বুজে ধীরে ধীরে পরিস্কার আরবী উচ্চারনে বললেন- “ইয়া আইউহান নাস। আন্তুমুল ফুকারাউ ইলাল্লহ, ওআল্লাহু হুওয়াল গনিয়ুল হামিদ’- অর্থাৎ, হে মানবসকল, নিশ্চয়ই তোমরা সবাই আল্লাহু’র প্রতি মুখাপেক্ষি, রিক্ত নিঃস্ব ফকিরের ন্যায়; আর আল্লাহু তায়ালাই’ হলেন একমাত্র ধনী ও স্বনির্ভর এবং সদা প্রশংসিত! বুঝলা কিছু?” ফকির জিঞ্জেস করেন!

তারপর আবার বলেন- “আসলে ফকির শব্দটি আরবী! অর্থ হল-অভাবী, যে দরজায় অপেক্ষামান থাকে! যারা মানুষের দরজায় অপেক্ষা করে তারা হলেন ভিক্ষুক; আর সাধু পুরুষেরা যেহেতু সদা আল্লাহুর দরবারের দরজায় নিজেকে অপেক্ষামান রাখেন, তাই তাদের ফকির নামেই অভিহিত করা হয়! আর আমার কাজকর্ম হল ফকিরি” কথাটা বলে একটু হাসলেন!

সেই ফকিরের কাছ থেকেই বদ্রে আলম জেনেছিল আল্লা বখশের কথা! নিজের জীবন বিপন্ন করে ধর্ম নিরপেক্ষ ও ঐক্যবদ্ধ ভারতের জন্য লড়াই করেছেন! মুসলিম লীগের দেশভাগের বিরোধিতা করেছিলেন! ফলস্বরুপ, ১৯৪৩ সালে মুসলিম লীগের ভাড়াটে গুন্ডা দিয়ে খুন করা হয়!

ফকির আবারও বলতে শুরু করলেন- “সমস্ত মুসলমানরা দ্বিজাতি তত্ত্বে বিশ্বাস করতেন না! সব মুসলমানরা পাকিস্থানের পক্ষে ছিল আর সব হিন্দুই একটি স্বাধীন ধর্ম নিরপেক্ষ ভারতের স্বপক্ষে ছিল-এই কথাটা ভুল! ডাহা মিথ্যা!” বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলেন ফকির! কিছুক্ষন চুপ করে বসেছিলেন! চোখ বুজে কিছু ভাবছিলেন! তারপর সেই জলদ গম্ভীর স্বরে আবৃত্তি করলেন-

“হামকো বাতলাও তো কিয়া মতলব হ্যায় ইয়ে পাকিস্থানকা! জিস্‌ জাগাহ্‌ ইস ওয়াক্ত্‌ মুসলিম হ্যাঁয়, নাজিম হ্যায় কিয়া হুজা! নেশ-ঈ তোহমত সে তেরে, চিসতি কা শিনা ঢাক্‌ হ্যায়, জলদ্‌ বাতলা কিয়া জমিন আজমের কী না পাক হ্যায়?

ব্যাটা, এর মানে কী বুঝলা? বল আমাকে পাকিস্থানের অর্থ কী? এই মাটি, যেখানে আমরা মুসলমানেরা থাকি, সে কি কম পবিত্র? তোমার নিন্দা চিস্তির বুক ভেঙ্গে দেয়! তাড়াতাড়ি আমাকে বল আজমীর কি অপবিত্র?”

বদ্রে আলমের কাছ থেকে সাবির আলী ফকিরের গল্প শুনে ভাবতে থাকে এখন থেকে ভাবনাটাকে পাল্টাতে হবে! চুপ করে থাকলে চলবে না! এই ঘৃণার অরাজনীতির বিরুদ্ধে চিৎকার বলতে হবে এই মাটি আমাদের কাছে পবিত্র!

ভেঙ্গে পড়া বদ্রে আলমকে নিয়ে সাবির আলী রাস্তায় নামে! হাঁটতে শুরু করে! এখনও অনেকটা পথ বাকি!

অন্য এক পরিযানের পরিকথার শুরু!