Next
Previous
1

সম্পাদকীয়

Posted in


সম্পাদকীয়



ওরে মন, পৃথিবীর গভীর - গভীরতর
                         অসুখ এখন। 

-বিমল ঘোষ 


আমাদের ফাল্গুনীদা মানে ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় – এই প্রবাদপ্রতিম প্রবীণ ব্লগার, সাহিত্যব্রতী, বৃদ্ধ-যুবক মানুষটিই কেমন যেন ঋতবাক ২য় বর্ষ, ২৩তম সংখ্যার সম্পাদকীয়র সুরটি বেঁধে দিলেন তাঁর প্রচ্ছদ নিবন্ধে। সত্যিই ‘পৃথিবীর গভীর – গভীরতর অসুখ এখন’। বিবেকহীন দুর্বিনীত অশালীন ঔদ্ধত্যে উন্মত্ত পৃথ্বী... শিক্ষাও মানুষকে নম্র হতে, ভদ্র হতে শেখায়না আজ। আসলে শিক্ষা মানে তো শুধু অনেকখানি পড়ে নেওয়া নয়! শিক্ষা মানে সেই লব্ধ জ্ঞানকে হৃদয়ঙ্গম করা, আত্মস্থ করা। তেমনটা আর হচ্ছে কই! মুখে বলা আর কাজে করা – দুয়ের মধ্যে বিস্তর ফারাক। যৌক্তিকতার বালাই নেই। সামাজিক দায়বদ্ধতা নেই। বিবেকদংশন নেই। আত্ম অহংকার আছে, আত্ম সম্মান নেই। ক’টা টিশার্ট আছে, ক’জোড়া জুতো আছে, ক’টা GF/BF আছে, ব্যাঙ্কে কত টাকা আছে, – সেই হিসেব নিয়েই ব্যস্ত। বেশ আছে কিন্তু! খাই-দাই কাঁসি বাজাই-গোছের স্ট্যাটাস। এরাই আমাদের তরুণ প্রজন্ম – দেশের আগামী ইতিহাস নাকি এরাই রচনা করবে!! 

এত নৈরাশ্য, তবু আশার কথা তো শোনাতেই হবে, আশা নিয়েই তো বেঁচে থাকা। সেই ভরসার কথাটি হলো, এখনও বেশ কিছু সমপরিমান মান ও হুঁশ সমন্বিত সামাজিক প্রাণী রয়েছেন ভারসাম্য রক্ষার জন্য। আর তাই আজও সৌভ্রাতৃত্ববোধ আছে। শ্রদ্ধা আছে। প্রেম আছে। আছে কদম কেশর আর বকুল বিছানো পথ। আছে সপ্তপর্ণীর মাতাল করা সৌরভ। ভোরের স্নিগ্ধ আকাশ আছে, দীর্ঘ দগ্ধ অপরাহ্ণের বিষণ্ণতা আছে, বৃষ্টির শব্দ মুখরিত বিনিদ্র রাত্রি আছে। অহংকারী বলে, আমার কিছু পাওয়ার নেই, আমি শুধু দিতে চাই। আমি বলি, বিপুলা এই পৃথিবীকে কি-ই বা দেওয়ার আছে আমার! বরঞ্চ পাওয়ার আছে অনেক কিছু – রূপ রস গন্ধ বর্ণ – প্রেম প্রীতি – শ্রদ্ধা ভালোবাসা – কাব্য গীতি ... আরও আরও কত কিছু – অজস্র অফুরান...! নিত্য নৈমিত্তিক দিনযাপনের রুক্ষ রণক্ষেত্রকে এরাই তো মসৃণ করে রাখে। এ তত্ত্ব হয়ত ‘অ-সাধারণ’-এর বোধের অতীত। আমি বড় ছাপোষা, বড় সাধারণ। আমি জীবনকে এই ভাবেই দেখি। আর তাই তো আমার পৃথিবীটা আজও বড় সুন্দর, বড় প্রতিশ্রুতিময়! একজন্মে যেন সবটুকু পাওয়া হয় না – বার বার ফিরে ফিরে আসতে ইচ্ছে হয়! 

আচ্ছা, হয়েছে! অনেক দার্শনিক তত্ত্ব কথা হলো। এবার কিছু জাগতিক ইনফো দেওয়া যাক। উৎকর্ষের ধারাকে অব্যাহত রাখতে ঋতবাকে অফিশিয়ালি সংযোজিত হলেন আরও কিছু বিশাল মাপের রত্নখচিত ব্যক্তিত্ব। ঋতবাক ঋদ্ধ হলো। ওদিকে ঋতবাক পাবলিকেশন বন্ধুদের বই ছাপার জন্য পুরোমাত্রায় প্রস্তুত। এদিকে আবার ঋতবাক বার্ষিক সংকলনে লেখা মনোনয়ন পর্বও শুরু হয়ে গিয়েছে। আপনারা তো জানেনই, লেখা নির্বাচনের বিচার্য মাপকাঠি লেখার গুণগত মান, বানান বিধির বিশুদ্ধতা, রচনাশৈলী, বিষয়গত সারবত্তা এবং অবশ্যই বক্তব্যের যুক্তিগ্রাহ্য স্বচ্ছতা। তাই ভালো লেখা পাঠান অনেক অনেক।

আরে, লেখা পাঠানোর কথায় মনে পড়লো, ঋতবাকে ঘোষিত হয়েছে গল্প প্রতিযোগিতা – ‘এসো গল্প লিখি’। সেখানেও তো পাঠাতে হবে গল্প! সাবজেক্টে ‘বিষয় – এসো গল্প লিখি’ - লিখে RRITOBAK@gmail.com – এই ঠিকানায় পাঠিয়ে দিন ন্যুনতম ৭০০ শব্দের গল্প, শেষ তারিখ ১৫ই জুলাই, ২০১৬। একজন গল্পকার সর্বাধিক ২টি গল্প পাঠাতে পারবেন। তবে আর অপেক্ষা কিসের! 

আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত সাহচর্যই ঋতবাকের একমাত্র পাথেয়। 

শুভেচ্ছা নিরন্তর

সুস্মিতা বসু সিং