Next
Previous
0

সম্পাদকীয়

Posted in




সম্পাদকীয়


যুবাং চিদ্ হি ষ্ম অশ্বিনৌ অনু দ্যূন্
বিরুদ্রস্য প্রস্রবণস্য সাতৌ।
অগস্ত্যো নরাং নৃষু প্রশস্তঃ
কারাধুনীব চিতয়ত্ সহস্রৈঃ। (ঋক্ বেদ)

রুদ্রনিনাদে ঝরঝর ঝরে বিপুল প্রস্রবণ
তাকে জিনে নিতে, ওগো অশ্বীরা, অনুদিন, অনুখণ
জাগিয়ে তুলতে তোমাদের ডাক দিয়েছে শঙ্খস্বনে
লোকবিশ্রুত এই অগস্ত্য শতসহস্র গানে। (অনুঃ গৌরী ধর্মপাল) 

বেদ যাকে প্রস্রবণ বলছে তা হ'ল কথার নির্ঝর। গানের ঝরণা। কথাসাহিত্যের উৎসমুখ এই সুরলোকে পৌঁছতে হয় সুরেরই পথ ধরে, গানের সরণী বেয়ে। বেদ সে পথকে বলে গাতু। গীতিপথ। ঋষি অগস্ত্য তাঁর বোধনসঙ্গীতে জাগিয়ে তুলতে চান রচয়িতার অন্তঃস্থিত ঋতবানের যুগল মূর্তিকে। তাঁরা জাগ্রত হ'লে সৃজনবাহনে সওয়ার হয়ে স্রষ্টা এসে পৌঁছবেন কথাপারাবারের তীরে। সেই অনাদ্যন্ত বারিধিতে ডুব দিয়ে নিজের অস্তিত্বকে তিনি মিশিয়ে দেবেন চিরনবীকৃত সৃজনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে। প্রাতিস্বিকতাকে ছাড়িয়ে এক সর্বত্রব্যাপী সৃষ্টিসুখের আনন্দধারার অংশ হয়ে তাঁর গান হয়ে উঠবে অপৌরুষেয়। 

ঋতবাকও সেই চিরন্তন সৃজনলোকের সন্ধানী। সে জানে আগামীতে যখন ব্যক্তি স্রষ্টার স্মৃতিও বিলুপ্ত হবে তখনও তিনি রয়ে যাবেন ঋতবাকের সঙ্গে অদ্বয় বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে। তাঁর ঋত বাক্ হবে অপৌরুষেয়। 

উদাহরণ স্বরূপ বলা চলে যে তাঁর জন্মশতবার্ষিকীতে সমর সেনকে কথাশরীরি অস্তিত্ব দান প্রকল্পে যোগদান করেছে ঋতবাকও। সমর সেন এখন আর কোনও ব্যক্তির নাম নয়। তিনি এখন শব্দসৃজিত বিশ্বের অংশীভূত। তাই তাঁর উচ্চারণ অপৌরুষেয়। 

সকলে ভালো থাকুন। সৃজনে থাকুন।।