Next
Previous
0

ধারাবাহিক - সুব্রত ঘোষ

Posted in




নিরালা ঢেউয়ের পাশে

(আবিদয্যান – ১)


সূর্য্য নেমে আসছে সমুদ্রের বুকে ৷ আর কিছুক্ষন পরেই জল এসে আমার শরীর ছোঁবে ৷ এই অশেষ জলরাশি আমার মতো এক অতি নগন্য অস্তিত্বকে মুহূর্তের জন্যে হলেও ভালবেসে যাবে, - এ কথা মনে আসতেই সারা শরীরে শিহরন খেলে গেল৷ কি অদ্ভুত গভীর নীল রং তোমার হে আটলান্টিক ! আস্তে আস্তে দেখলাম আলো কমে এলো৷ আমি যেন নীল রং এ ভিজে গেলাম৷ পড়ে রইলাম বেলাভূমিতে, উঠতে ইচ্ছে করলো না৷ এ আমার যেন এই মহাসমুদ্রের কাছে আত্মসমর্পন ৷ সকাল থেকে সারাদিন এই নীল সমুদ্র কেমন যেন মোহাবিষ্ট করে রাখে। চোখে ঘোড় লাগে। এ আমাদের পুরী কিংবা দীঘার সমুদ্রের থেকে অনেক আলাদা। এ সমুদ্র যেন গভীর চোখ দিয়ে ডাকে। যেন ঘুমের গহন আঁধারের কেউ অবচেতন কে অধিকার করে আছে।

জীবনানন্দের কথায় বলতে পারি :

‘ অলস মাছির শব্দে ভ’রে থাকে সকালের বিষন্ন সময়,

পৃথিবীরে মায়াবীর নদীর পারের দেশ বলে মনে হয় ;

সকল পড়ন্ত রোদ চারিদিকে ছুটি পেয়ে জমিতেছে এইখানে এসে’

গ্রীষ্মের সমুদ্র থেকে চোখের ঘুমের গান আসিতেছে ভেসে.

এখানে পালঙ্কে শুয়ে কাটিয়ে অনেক দিন জেগে থেকে ঘুমাবার

সাধ ভালোবেসে।‘

- (ধূসর পান্ডুলিপি)





আইভরি কোস্ট, মানে Côte d’Ivoire (কোৎ দি’ভোয়া)....এই অসীম আটলান্টিকের গায়ে লেগে থাকা পশ্চিম আফ্রিকার এক মায়াবী দেশ ৷এখানকার সবচেয়ে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় শহর আবিদয্যান (Abidjan), এখানেই আটকে আছি কিছুদিন ৷ দাকার যাওয়ার আগে এই শহরের মায়ার বাঁধনে জড়ালাম মনে হচ্ছে ৷ এখানকার মানুষজনের মুখশ্রীতেও কেমন যেন মায়া লেগে আছে ৷ ঐ যে আমার দিকে যে ছেলেটা এগিয়ে আসছে, ওর নাম কোবে ৷ কি সুন্দর ময়াময় মুখ, হাতে এক প্লেট মাছ ভাজা ৷ এক হাসির ঝিলিক দিয়ে প্লেট্ টা আমার সামনে ধরল –‘S’il vous plait’৷ এই অনুরোধ তো আর ফেলা যায় না ৷ সদ্য মাছ ধরে, ওখানেই আগুন জ্বেলে মাছগুলো ভাজা হচ্ছে ৷ সমুদ্রের মাতাল হাওয়া কোবের এই মাছ ভাজাকে এই মুহুর্তে বিশ্বের সবচেয়ে কাঙ্খিত বিষয় প্রতিপন্ন করেছে, কোনো সন্দেহ নেই৷ কোবেকে ধন্যবাদ জানাতেই ও উৎসাহীত হয়ে বিভিন্ন মাছ সম্পর্কে কথা বলতে লাগলো ৷ আজ সারাদিন এখানে অনেক sketch করেছি। সমুদ্রের পারে জেলেদের আড্ডা। নৌকো টেনে টেনে সমুদ্রে নিয়ে যাচ্ছে মাঝিরা। কিংবা নারকেল গাছের ফাঁকে ফাঁকে আলো ছায়ার খেলায় পৃথুলা কৃষ্ণাঙ্গীদের মাছের ঝুড়ি নিয়ে ফেরা। রদ্দুরের আলো কপাল ছুঁয়ে নাকের মাথা বেয়ে মোটা ঠোঁটে লেগেছে। পাথরের মূর্তির মধ্যে যেন প্রান ঝিলিক দিয়ে উঠছে। এই সব খন্ড চিত্রাবলী ধরা দেয় আমার কাছে। কোবে অনেকক্ষণ আমার ছবি আঁকা দেখছিল। এখন আমার ক্লান্ত লাগছে। তাই শরীরটাকে এলিয়ে দিলাম। আধশোয়া অবস্থায় দেখতে পাচ্ছি সমুদ্র কূল অর্ধ চন্দ্রাকারে দূরে মিলিয়ে গেছে ৷ ক্ষীণ রুপোলি আলোর রেখা উপকূলের ওপর দিয়ে ফলার মতো চলে গেছে ৷ কোবের কথা চাপা পড়তে শুরু করলো হঠাৎ এক FM Channel এর গানের আওয়াজে ৷ দেখলাম এক কৃষ্নাঙ্গ লোক কাঁধে একটা বড় radio নিয়ে চলেছে ৷ সঙ্গে বৌ, দুই বাচ্চা৷ গান হচ্ছে এদের স্থানিয় ভাষায়৷ আর মাঝে মাঝে অতি নাটকিয় স্বরে French ভাষায় গান সম্পর্কে কেউ কিছু বলছে ৷

কোবে কে ঐ গান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করায় ও বলল যে গানটা মালি দেশের, আইভরি কোস্টের ভাষায় নয়৷ ঐ radio নিয়ে পরিবারটি মালি থেকে এসেছে হয়ত৷ মালি তো উত্তর পশ্চিম দিকেই রয়েছে৷ তার আরেক পাশেই গিনি (Guinea)৷ আসলে এই জায়গাটা Gulf of Guinea র ওপরেই অবস্থান করছে৷ সমুদ্রের একটা দীর্ঘ গোলাকৃতি অংশের মধ্যে এই আবিদয্যান শহরটি৷ মালি ছাড়াও রয়েছে বুরকিনা ফাসো, লিবেরিয়া আর ঘানার মতো প্রাচীন ঐতিহ্যশালী দেশসমূহ এই আইভরি কোস্ট কে ঘিরে৷ আইভরি কোস্টের প্রধান ভাষা ফরাসীর সঙ্গে কয়েক প্রজাতির আদিম ভাষার চলও আছে। যেমন বাউলে, দিউলা, দ্যান, সেবারা সেনুফো এরকম কত ভাষায় কত লোকে কথা বলে। বাউলে আর দিউলা তে অনেক সুন্দর গানও শুনেছি। এদের অনেক ভাষাই এই সব প্রতিবেশী দেশ গুলোয় ব্যবহৃত হয়। বহূ ঝঞ্ঝাটের মধ্যেও আটলান্টিকের গায়ে লেগে থাকা এই আদিমতম ভূখন্ডে মধ্যমনি হয়ে উঠেছে ইতিহাসের এই ফরাসী উপনিবেশ Cote d’ivoir ৷ আর এই দেশের সবচেয়ে আদরের শহর আবিদয্যান হয়ে উঠেছে পর্যটকদের স্বপ্নের ঠিকানা ৷ হয়ে উঠেছে বেচা কেনার আদর্শ স্ংযোগ স্থল৷ দেশের দক্ষিণ-পূর্বে Gulf of Gunea র কোলের ভেতরে একটা পরিবেষ্টিত জলস্থলে (lagoon) আবিদয্যান অবস্থিত। আবিদয্যানের পাশাপাশি আরও কয়েকটা শহর প্রাধান্য পেতে শুরু করেছে এই দেশে। দেশের মধ্যাংশে রয়েছে ল্য প্লাতো (Le Plateau), সবচেয়ে নামী ব্যবসাঞ্চল। বিত্তশালীদের আধিপত্য এখানে। তাই এ দেশের প্রানকেন্দ্রে Le Plateau সেজে উঠেছে বহূতলের ওপর বহূতলে৷ আলোর মালা প্রসারিত হয়েছে শহর ছাড়িয়ে দিকচক্রবালে৷ অবশ্যি আইভরি কোস্ট অনেক প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবসা কেন্দ্র ছিল৷ হাতির দাঁতের সরবরাহ হত ইওরোপে। এই ব্যবসাই সুপরিচীত করে এই দেশকে প্রাচীনকাল থেকে ৷ সেটা এর নাম থেকেই অনুমান করা যায়৷ আবিদয্যান ই এই ব্যবসার প্রধান স্থল ছিল৷ তবে ব্যবসার মুনাফা লুটতো ইওরোপীয়ানরাই৷ প্রথমে ফরাসীরা, তারপরে পর্তুগীজরা ও আরও অনেকে এই ব্যবসায় ঝাঁপিয়ে পড়ে৷ যাদের হাতি, তারা শ্রমিক হয়েই চোদ্দ পুরুষ কাটিয়ে দিয়েছে৷ হাতিও আর আগের মতো নেই৷ তবে সাহেবদের দেওয়া নামটা রয়ে গেছ – Ivory Coast ৷


ল্য প্লাতো ।


একটু হেঁটে গেলেই আমার থাকার জায়গা৷ বেশ মনোরম বিশ্রামাগার৷ ফিরে আসতেই দেখলাম লবি তে অনেক ভীর৷ Reception desk এর দুই পুরুষ আর দুই মহিলা নবাগত অতিথিদের সময় দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে৷ ওপর থেক ঝালর দেওয়া আলোয় পুরো জায়গাটা ঝলমল করছে ৷ কৃষ্ণাঙ্গ সুবেশী ভদ্রলোকেরা, ভদ্রমহিলারা ব্যস্ত, কেউ কেউ এক একটা জায়গা কেন্দ্র করে জমায়েতে ৷ তাদের মধ্যে পশ্চিমী প্রভাব লক্ষণীয়৷ শুদ্ধ ফরাসীতে বাক্যালাপ চলছে ৷ এখানে উপস্থিত আছে অনেক শ্বেতাঙ্গ মানুষ৷ কেউ sofa য় বসে coffee চুমুক দিচ্ছে৷ কেউ কেউ গল্প করছে ৷ কিছু তরুন তরুনীরা পাশেই smoking zone এ ব্যস্ত ৷আমি লবি সংলগ্ন সিঁড়ির ওপরে দাঁড়িয়ে যেন অন্য এক বিশ্বকে দেখছি ৷ এখানে যে কোনো মানুষের সঙ্গেই আমার চেহারাগত পার্থক্য প্রচুর ৷ আমার ভারতীয় ত্বকের রং ও একেবারেই ভিন্ন ৷ আমার এই ভাবনাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতেই মনে হয় এক স্থানীয় ভদ্রলোকের আবির্ভাব হলো ৷ “Bonsoir” বলে সম্ভাষন করে আমার দিকে এগিয়ে এল যে ব্যাক্তি, তার চেহারা আমার আড়াই গুন বেশী তো হবেই ৷ সুঠাম, গাঢ় কাল চেহারা, তার ওপরে কালো ব্লেজারে ওকে এক আশ্চর্য্য বলিষ্ঠ রুপ দিয়েছে ৷ আমার সঙ্গে করমর্দন করে আমার হাত টা কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখলো ৷ আমাদের দু’জনের হাতের দিকে দৃষ্টিপাত করে বলল, ‘তুমি কোথাকার লোক?’ আমি ভারতীয় শুনে হেসে বলল, ‘জানো তো ভাই, গোটা বিশ্ব কেবলমাত্র দুটো রং এ বিভক্ত ৷ কালো আর সাদা ৷ তা’ তোমার অস্তিত্ত কোথায়?’ এই বলে সাদা ঝকঝকে দাঁতের পাটি মেলে ধরে প্রায় অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো ৷ প্রথমে আমি একটু ঘাবড়ে গেলাম৷ তারপর ওর রসিকতা টা বুঝে মজা পেলাম৷

মজা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঐ কথায় যেন চিরকালের অনিবার্য্য দুই গোলার্ধের কথা মনে করিয়ে দিল৷ সামনের এই কালো মানুষগুলোকে যেন সাদা মানুষদের পোষাক পরিয়ে আলোর নীচে দাঁড় করানো হয়ছে ৷ ওপর থেকে সাদা আলো ওদের শাষন করছে ৷ সেই সাদা আলোর সাদা মানুষেরা হাতে পান পাত্র নিয়ে তাড়িয়ে তাড়িয়ে মজা দেখছে ৷ কি ভালো, আর কি মন্দ...সব কিছুই দেখা হয় ঐ সাদা আলোর বলয়ে৷ বাইরে তখন তাকিয়ে দেখি অন্ধকার ৷ দূরে সমুদ্র কালো হয়ে গেছে ৷ সমুদ্রের থেকে কালো কালো মানুষ সামুদ্রিক প্রানীর মতো উঠে আসছে ৷ আবার কালো অন্ধকারে মিলিয়ে যাচ্ছে ৷ ওটা যেন আরেকটা গোলার্ধ, যেখানে শুধু জমে থাকা অন্ধকার ৷ অন্ধকারের চোখ দিয়ে কি কিছু দেখা যায় ? সে চোখ তো বুজে আছে ৷



“আদিম-অকৃত্রিম’ – জলরং ( শিল্পী – সুব্রত ঘোষ )।


আবার বেড়িয়ে এলাম বাইরে অন্ধকারে।অদূরে সমুদ্রের থেকে বড় বড় নৌকো টেনে টেনে বালির ওপরে তুলছে কিছু ছায়া দেহ। পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলাম বেশ অনেকটা। চারিদিকে নোনা হাওয়া বইছে। সামুদ্রিক মাছের গন্ধে শরীর ভরে গেল। অন্ধকারে সমুদ্রকে কেমন Surreal অস্তিত্ত্ব বলে বোধ হয়। জলের উপরতলের সামনে কিংবা পেছনে কোনো মাত্রা খুঁজে পাওয়া যায় না। কিন্তু এখন ঢেউ য়ের শব্দ দিনের বেলার ঢেউ য়ের চেয়ে অনেক জোড়ালো। ঐ শব্দ স্রোতে অদূরের হটেলের কোলাহল ও অশ্রুত হয়েছে। শুধু এই ছায়া শরীর দের কিছু অস্ফূট শব্দ পাচ্ছি। আর ভারী নিশ্বাস – প্রশ্বাসের শব্দ। খুব কাছে গিয়ে তাদের দেখলাম। অন্ধকারের সঙ্গে মিশে যাওয়া সেই শরীরগুলো যেন পাথরের। মাঝে মাঝে জলরাশির দূরে কোনো ঘূর্নিয়মান বাতিঘর থেকে হালকা আলোর ঝলক আসছে। সেই আলোয় এই ছায়াসম ধীবরদের অবয়ব দেখতে পাচ্ছি। কঠীন শক্ত চোয়ালও চোখে পড়ছে। মুখাবয়বের গভীর বলিরেখা গুলোও এখন দৃশ্যত: হয়ে উঠছে। নোনা হাওয়ার এক ঝট্কায় যেন সুদূর অতীতে চলে গেলাম। সেই প্রাচীন কাল থেকে আজ অবধি এই মানুষগুলোই যেন এই একই কাজ করে চলেছ। পৃথিবী তোলপাড় হয়ে গেলেও ওরা থামবে না। ভবিষ্যতেও ওদের এভাবেই দেখা যাবে।

মহাবিশ্বের অনন্ত যাত্রাপথের এই শ্রমজিবীদের দেখে বাকরুদ্ধ হয়েছিলাম। মনে হয়েছিল আমাদের সভ্যতার জয়রথের আলোয় কি এ অন্ধকার দূর হবে না। না কি এই ছায়া শরীররদের ছারা এই রথের জয়যাত্রা স্তব্ধ হয়ে যাবে ! তা’ই এত উন্নতির শিখরে এসেও মানু্ষের দাসের প্রয়োজন চলে যায় নি। দাসত্বের অনেক প্রকারন্তর হয়েছে বোধ হয়। সেই দাসবৃত্তি কে আরও কত বৈচিত্রে, কত মাহাত্য দিয়ে প্রয়োগ করা যায়,..... এটাই সভ্যতার মূল্ লক্ষ্য। তা’ই মনে হয় এই ছায়াবয়ব শ্রেণীকে মেনে নিতে হয়েছে সভ্যতার ইতিহাসের এই চরম সত্যকে। এই সত্যই তো মানুষে মানুষে বিভাজন এনেছে। আলোর দুনিয়াকে করে তুলেছে গৌরবান্বিত, আর ছায়াকে করেছে অস্পৃশ্য।


তবুও এই ছায়াশ্রেণী গান বাঁধে। নেচে ওঠে আপন ছন্দে। কি অপ্রতুল জীবনী শক্তি তাদের। তাদের এই জীবন রসদের ওপরেও আলো শ্রেণী থাবা দিতে ভোলে না। তাই বিশ্বায়নের স্রোতে ছায়ার অনেকাংশই আলোর সঙ্গে মিশ্রনে ধূসর হয়ে ওঠে। তখন সেই মিশ্রিত ছায়া গোষ্টি আলোর শোষণ কর্মকান্ডে অনুঘটকের ভূমিকা নেয়। দূর থেকে দেখে আমরা অভিনন্দন জানাই সভ্যতার অগ্রগতি দেখে ! এই প্রসঙ্গে আইভরি কোস্টের প্রখ্যাত কবি তানেলা বনি র লেখা উল্লখ করি। তার ফরাসীতে লেখা পদ্য বাঙলায় তর্যমা করার চেষ্টা করলাম:

“ আমি স্বপ্ন দেখি এক অসীম সাগরের কবিতার

আমি নেচে উঠি ত্বকের নীচের স্বাগত ধ্বনির তালে

পায়ের জমি – আমার বসত

যখন অজস্র পলিত আত্মার হাত

শক্ত তারের বেড়া বুনে চলে

আমি জানি না , আমরা একসঙ্গে বেঁচে আছি কি’ না

এক সম বিভাজনের নির্দেশিকার মুখে –

ভুলে যাও সেই সোনা তৈরীর ক্ষার – স্বপ্ন,

আর প্রয়োজনীয় মিশ্রণের অস্তিত্ত্বকে .......” ।।



কবি তানেলা বনি ।

তানেলা র জন্ম ও বড় হওয়া এই আবিদয্যান এ। তিনি সমকালীন আফ্রিকান সাহিত্যিকদের মধ্যে অগ্রগন্যা। দীর্ঘদিন দর্শণ নিয়ে অধ্যাপনা করছেন। একসময়ে তার কিছু প্রতিবাদী ও প্রতিক্রিয়াশীল লেখার জন্য তিনি বিতর্কিত হয়ে উঠেছিলেন। তখন এ দেশে ধর্মীয় কোন্দল আর প্রজাতি ভিত্তিক দ্বন্দ আগুন ছড়াচ্ছিল। এর উপরে যুক্ত হয় আর্থিক কষ্ট আর প্রতিবেশী দেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা। ক্রমে এই সঙ্কট গৃহযুদ্ধের আকার নেয়। তানেলা স্বেচ্ছা – নির্বাসন নিয়ে দেশ ত্যাগ করে ফ্রান্সে বসবাস করতে থাকেন। ২০০২ থেকে ২০১২ সাল অবধি আইভরি কোস্টে পা রাখেন নি, যতক্ষন না শান্তি চুক্তি স্থাপন হয়। দেশে গনতান্ত্রিক নির্বাচন হয়ে নতুন সরকার তৈরী হয়েছে ২০১০ এ। অচলাবস্থা কাটিয়ে বিশ্বায়নের স্রোতে আইভরী কোস্ট নতুন দিনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করল তখন থকেই।



হাই ওয়ে – আবিদয্যান ।