সম্পাদকীয়
Posted in সম্পাদকীয়ধর্ম বিষম বিড়ম্বনা। এর স্বনিযুক্ত ধ্বজাধারীরাই আবহমান কাল ধরে কালিমা অর্জনের কাজটি খুবই নিপুণভাবে করে আসছেন। সম্প্রতি এক ধর্মীয় উৎসবের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে এই ভাবনাটি প্রাসঙ্গিক মনে হল।
আসলে এই যে উৎসবকে আমরা ধর্মীয় তকমা দিয়ে থাকি, তার মূল চলনটি প্রকৃতপক্ষে সামাজিক। এই সূত্রটি ছিন্ন হলে কোনও ধর্মীয় উদ্যাপনই তার প্রার্থিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবে না। একথা খুব কম মানুষই মাথায় রাখেন আর ধর্মীয় নেতাদের কাছে এর তাৎপর্য ধরাছোঁয়ার বাইরে।
কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। দেশের নানা প্রান্তে। অথচ তারা জুড়ে গেল একটি নাছোড় যোগসূত্রে। সংস্কৃতির পীঠস্থান এই শহরে উর্দু কবি ও চিন্তক জাভেদ আখতার আমন্ত্রিত হয়েছিলেন একটি অনুষ্ঠানে আর বুকার প্রাইজ জয়ী লেখক এবং সামাজিক কর্মী বানু আখতারকে আহ্বান জানানো হয়েছিল তাঁরই নিজের রাজ্য কর্নাটকের দসেরা উৎসবের উদ্বোধনে অংশগ্রহণের জন্য। দুটি ক্ষেত্রেই দুই ভিন্ন ধর্মের অনুশাসনে বাধা পড়ল স্বাধীনচেতা দুজনের গতিবিধিতে।
বলা হয়ে থাকে public memory is short - তবুও হয়তো অনেকেরই মনে আছে প্রগতিশীল বামপন্থী জমানায় ধর্মীয় ফতোয়ার জেরেই শহর ছাড়তে হয়েছিল তসলিমা নাসরিনকে। সেই লজ্জার ক্ষত আমরা এখনও বহন করে চলেছি। তাতে যুক্ত হল আরও একটি।
সপ্তাহকাল পর বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ মিলনমেলা। দেশ ও বিশ্ব নানান কারণে টালমাটাল এমন এক পরিস্থিতিতে। 'মানুষের মৃত্যু হলে তবুও মানব থেকে যায়' - সেই মানবতার ধর্মই যেন দেবীর অঞ্জলির মন্ত্র হয়ে ওঠে!
সুস্থ থাকুন। দায়বদ্ধ থাকুন।
শারদ শুভেচ্ছা!