Next
Previous
3

সম্পাদকীয়

Posted in


সম্পাদকীয়




শরত আলোর কমল বনে
বাহির হয়ে বিহার করে
যে ছিলো মোর মনে মনে...

নিয়ম মত শরত এসে গেল। আর শরতের সোনা ঝলমল রোদের ওম, পেঁজা তুলোর মতো মেঘ ভাসা নীল আকাশের গন্ধ মেখে প্রকাশিত হল ঋতবাক ২য় বর্ষ, ১৩তম সংখ্যা। বা বলা ভালো, দ্বিতীয় বর্ষ, প্রথম সংখ্যা। দ্বিতীয় বর্ষের শুরুতেই একটু অন্যরকম ঋতবাক। কিছু সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়াই গেল। বাদ পড়ল প্রচুর লেখা। বিচার্য মাপকাঠি লেখার গুণগত মান, বানান বিধির বিশুদ্ধতা, রচনাশৈলী, বিষয়গত সারবত্তা এবং অবশ্যই বক্তব্যের যুক্তিগত স্বচ্ছতা। অনেক বন্ধু ক্ষুণ্ণ হবেন, জানি। কিন্তু সম্পাদকের নিরুপায়তা উপলব্ধি করে অচিরেই ক্ষমাও করে দেবেন, এ বিশ্বাসও রাখি।

মুদ্রণ সংখ্যার কাজও এগিয়েছে অনেকটাই। প্রকাশক, মুদ্রক প্রস্তুত। লেখা নির্বাচনের কাজও এগোচ্ছে দ্রুত গতিতে। আবারও সেই একই কথা, লেখার সার্বিক মান লেখা নির্বাচনের একমাত্র মাপকাঠি। ঋতবাক মুদ্রিত সংস্করণকে কোন প্রথিতযশা সাহিত্যিকের সক্রিয় অংশগ্রহণের গৌরবে একীভূত করার প্রত্যাশায় সম্পাদক মণ্ডলী নিরন্তর সচেষ্ট। একটি সত্যিকারের অন্যধারার বাংলা সাহিত্য সংকলন প্রকাশের এই প্রচেষ্টায় ঋতবাক সম্পাদক মণ্ডলীর সঙ্গে আপনারাও আছেন, সুনিশ্চিত জানি। 

এরই মধ্যে ঘটে গেল এক মহামানবের মহাপ্রয়াণ। আবুল পাকির জয়নুল-আবেদিন আব্দুল কালাম। শিলং আই আই এম এ ‘বাসযোগ্য পৃথিবী’ বিষয়ে বক্তব্য রাখতে রাখতেই তিনি পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে। ‘বাসযোগ্য পৃথিবী’!! কি বলতে চেয়েছিলেন? শোনা হল না। আজীবন বিজ্ঞান নিষ্ঠ এই মানুষটি যেতে যেতেও যেন আপামর বিশ্ববাসীকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে গেলেন এক কঠিন আত্মজিজ্ঞাসার সামনে। আজ, স্বাধীনতার ৬৯তম উদযাপন দিবস অতিক্রম করে এসেও কি সময় হয়নি এ প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার?

স্বাধীন ভারতবর্ষেই জন্মেছি। আজ থেকে মাত্র তিরিশ বছর আগের তুলনায়ও বর্তমান কালের আর্থসামাজিক, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক, বিশেষত সর্বাঙ্গীন ব্যবহারিক পরিমণ্ডলে এক সর্বাত্মক অগ্রগতি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু সার্বিক মূল্যবোধে কোথাও কি একটুও টান পড়েনি? সামনে তো অন্ধকার নেই! বরঞ্চ অজস্র আলোর হাতছানি। তারই মধ্যে সঠিক আলোটিকে চিনে নেওয়ার পথের হদিস ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দিয়ে যেতে হবে আমাদেরই। এ দায়িত্ব এড়ানোর নয়।

সর্বাত্মক সমৃদ্ধির শুভেচ্ছা নিরন্তর।

সুস্মিতা বসু সিং