1

সম্পাদকীয়

Posted in


সম্পাদকীয়




মধ্যদিনে যবে গান বন্ধ করে পাখি,
হে রাখাল, বেণু তব বাজাও একাকী…

উদগ্র উত্তাপে শহর উদ্‌ভ্রান্ত… তবুও বাঙালীর সাহিত্য রসবোধে টান ধরানোর সাধ্য নেই স্বয়ং প্রকৃতিরও। তাই প্রকৃতির এই ষড়যন্ত্রকে উপেক্ষা করে নির্দিষ্ট সময়েই প্রকাশিত হল ঋতবাক প্রথম বর্ষ, দশম সংখ্যা। 

এমাসেই গেল বাঙালীর অন্যতম প্রধান উৎসব, রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী। জন্মের ১৫৫ বছর পরেও ভদ্রলোক কি অসম্ভব প্রাসঙ্গিক আর আধুনিক, ভাবতেও আশ্চর্য লাগে। 

কিন্তু একইসঙ্গে একথাও মনে হয়, রবীন্দ্রনাথের যথার্থ এবং সম্পূর্ণ মূল্যায়ন বুঝি আজও হয়নি। এখন আর শুধু আলোচনা ভালো লাগে না... এবার সময় হয়েছে তাঁকে উপলব্ধি করার, জীবনের মূল্যবোধে সম্পৃক্ত করে তাঁকে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের নির্ঘন্ট এসেছে এবার। ‘তিনি আমার প্রাণের আরাম আত্মার শান্তি মনের আনন্দ’... এ কথা বার বার উচ্চারণ করলেই শুধু হবে না আর... এবার এই আরাম কে, শান্তি কে, আনন্দ কে সুগভীর ভাবে জীবনের স্বতঃস্ফূর্ততায় দ্রব করে জীবনের অনির্বচনীয় নিগূঢ় ক্রিয়ায় মিলিত করে পূর্ণতার অভিমুখে ধীরোদাত্ত গমনেই আত্মনিয়োগ করতে হবে। আর এই ভাবেই হয়তো তাঁর যথার্থ এবং সম্পূর্ণ মূল্যায়ন করে তাঁকে পূর্ণাঙ্গ শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা যাবে।

এরই মধ্যে বড় অসময়ে পরবাসে চলে গেলেন আমাদের সকলের কাছের মানুষ, সাম্প্রতিক কালের বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট কথাশিল্পী, সুচিত্রা ভট্টাচার্য। অবিনশ্বর কেউই নন... কিন্তু তাই ব’লে এতো তাড়াতাড়ি? বাংলা সাহিত্যের যে আরো অনেক কিছু পাওয়া হল না ! ঋতবাক-এর পক্ষ থেকে বিনম্র প্রণতি সেই অমর সাহিত্যিকের উদ্দেশ্যে। 

ক’দিন আগেই ঘোষিত হয়েছে ঋতবাক মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশের সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে দু’চার কথা না বললেই নয়। আপনারা জানেন, ঋতবাক প্রথম সংখ্যা, অর্থাৎ অগাস্ট, ২০১৪ থেকে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ পর্যন্ত প্রকাশিত সমস্ত লেখার মধ্য থেকেই নির্বাচিত হবে ঋতবাক মুদ্রিত সংস্করণের লেখা, কবিতার ক্ষেত্রে অবশ্য ‘এবং একুশ’ থেকেও বাছা হবে কবিতা, এমনই সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই লেখা নির্বাচনের চূড়ান্ত পর্বে এমন একজন বিদগ্ধ ব্যক্তিত্বের কাছে লেখাগুলি যাবে, যিনি কোনো ভাবেই ফেসবুকের সঙ্গে জড়িত নন। তাই, ব্যক্তিগত ভাবে তিনি আমাদের কাউকেই চেনেন না। আর সেই কারণেই, সেখানে লেখা নির্বাচনের একমাত্র মাপদণ্ড হবে লেখার বিষয়গত এবং গুণগত মান। 

ঠিক এই জায়গাতেই আমার-আপনার দায়িত্ব শতগুণ বৃদ্ধি পায়। নিশ্চিত জানি, লেখার বিষয় নির্বাচন এবং গুণগত মান রক্ষার বিষয়ে বিশেষভাবে সতর্ক ও যত্নবান আপনারা। প্রত্যাশা রাখি, আমার কাজকে শত-সহস্রগুণ বর্ধিত করে সুচিন্তিত, মনোজ্ঞ লেখায় ভরে উঠুক ঋতবাক-এর ই-মেইল আই.ডি। 


শুভেচ্ছান্তে
সুস্মিতা বসু সিং

1 comment:

  1. লেখা নির্বাচনের ব্যাপারে যে দূরদর্শীতা দেখানো হবে সেটা সত্যি খুব ভালো প্রস্তাব। হ্যাঁ, লেখক নয়, লেখার গুণবলী ই হোক প্রকাশের মাণদণ্ড !!

    ReplyDelete