Next
Previous
0

সম্পাদকীয়

Posted in


সম্পাদকীয়


বর্ষা আসি আসি করেও আসছে না। গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। ভূগর্ভস্থ জল দিন দিন আরও গভীরে সেঁধোচ্ছে। আর ক’বছর পর কি হাল হবে, ভাবতেও ভয় করে। আর এসবের প্রেক্ষাপটে দেশ জুড়ে এই আর্থ‌রাজনৈতিক ক্যারিকেচার! সত্যি, আমাদের সহনশীলতা তুলনাহীন!

এরই মধ্যে ঘামতে ঘামতে গালে হাত দিয়ে ভাবি, এ কিসের ফলশ্রুতি? কল্যাণমূলক অর্থনীতি, যাকে বলে কিনা welfare economics -তারই backfire বা বিপর্যয় নয়তো! সাম্যবাদ চিরকাল যে আর্থসামাজিকভাবে পিছিয়ে থাকা সাধারণ মানুষের উত্থানের কথা বলে এসেছে, আজ ভারতবর্ষের রাজনীতিতে তো তাদেরই রমরমা। যেটা সাম্যবাদ কখনও বলেনি, বা ভাবেওনি হয়তো, সেটা হলো এই যে, যাদের কিছুই নেই, তাদের কিন্তু শিক্ষা বস্তুটাও নেই। অথচ সাম্যবাদের বিশিষ্ট ভারতীয় প্রবক্তা তথা সেই সব উজ্জ্বল নক্ষত্ররা কিন্তু প্রায় বেশীরভাগই শিক্ষিত, সংস্কৃত, আলোকপ্রাপ্ত পরিবার থেকে এসেছেন। সাম্যবাদের কথা না হয় ছেড়েই দিলাম... ন্যূনতম রুচিবোধ, ভদ্রতাবোধটুকুও আজ ভারতীয় রাজনীতি থেকে বিলুপ্তপ্রায়, এবং সেই রাজনীতির শীর্ষে যাঁরা এখন বিরাজমান, তাঁদের কথা এখানে বলে বিড়ম্বনা বাড়ানোরও কোনও অর্থ হয়না।

মোদ্দা কথা হলো, সাম্যবাদের স্বপ্ন সার্থক করে যে subaltern মানুষগুলোর ভারতীয় রাজনীতিতে উত্থান ঘটলো গত কয়েক দশক ধরে, আজকের এই অদ্ভুত পরিস্থিতি অধিকাংশেই তার ফলশ্রুতি। শ্রেণীশত্রু Elitist বুর্জোয়ারা তাই এখন শুধু মুচকি মুচকি হাসছেন।

যাক... এসব জাহাজের খোঁজখবর আমাদের মতন আদার ব্যাপারীদের কাজে আসে না। আমরা বরং আমাদের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির আপাতসুন্দর  নরম বালিশে মুখ গুঁজে যতটা সম্ভব সময় কাটিয়ে দিই... এবং সংখ্যায় বাড়তে বাড়তে ও এই গ্রহের যৎপরিমাণ অবশিষ্ট রসটুকু শুষে নিতে নিতে কোনও এক মহান, অতি‘মানবিক’ ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, যেন তাড়াতাড়ি বৃষ্টি এসে এই অসহ্য গরমের হাত থেকে রেহাই দেয়।

ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা নিরন্তর...