সম্পাদকীয়









আজ আরও একটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। কালের নিয়মে প্রতি বছর দিনটি ফেরত আসে। কিন্তু এমন একটি দিনের সার্থকতা কি কেবল বিশেষভাবে চিহ্নিত হওয়ার মধ্যে? সঠিক প্রেক্ষিত থেকে সরে এলে এই দিনটির আর আলাদা কোনও মর্যাদা থাকে না। কারণ প্রশ্নটি নিছক একটি ভাষার আব্রু রক্ষার প্রয়াসের চেয়েও অনেক বড়। রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস জড়িয়ে আছে বিষয়টির সঙ্গে।

ভাষার অধিকার যে কোনও মানুষের মৌলিক অধিকারগুলির অন্যতম। তার সঙ্গে স্বভাবতই যুক্ত হয়ে যায় কোনও একটি ভাষায় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে নিজেকে মেলে ধরার একান্ত আপন ক্ষেত্রটি। গোল বাধে এখানেই।

বল্গাহীন, স্বতস্ফূর্ত ভাষার স্রোত আটকাতে বারবার প্রয়োজন হয়েছে রাষ্ট্রীয় পেশীশক্তির। ভাষার জাদুকরী ক্ষমতা এই যে তা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে পারে। একক থেকে বহুস্বর হয়ে উঠতে সময় লাগে না। এর ফলে শাসক গোষ্ঠীর মধ্যে যে নিরাপত্তাহীনতা আর ভীতি সঞ্চারিত হয়, তার একমাত্র নিবৃত্তি অন্ধ বলপ্রয়োগে। স্বৈরতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি বারবার প্রত্যক্ষ করেছে।

পৃথিবীর বৃহত্তম গণতন্ত্র বলে যে দেশ শ্লাঘার উত্তাপ উপভোগ করে, তার এরকম আচরণ শোভা পায় কি? আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রাক্কালে ভারত থেকে ফরাসি সাংবাদিক ভানেসা দুনাকের বহিষ্কার এই ধন্দের সামনে বেআব্রু করে আমাদের।

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা নিরন্তর।

No comments:

Post a Comment