সম্পাদকীয়

 




হিংসায় উন্মত্ত পৃথ্বী! এ উক্তি আজকের নয়। কিন্তু এমন প্রাসঙ্গিক কখনও ছিল কি? অন্যভাবে ভাবলে এরকম কোনও কালের মধ্য দিয়ে কি আমাদের সভ্যতার ইতিহাস বিবর্তিত হয়েছে হানাহানি আর রক্তক্ষয় যার কেন্দ্রস্থ উপাদান ছিল না? 

সত্যিই ছিল না। আমাদের মহাকাব্যগুলি এই মতের সারবত্তা প্রমাণ করবে। প্রতিটি হত্যা সেখানে অকাট্য যুক্তিজালের ন্যায়বলয়ে সুরক্ষিত। কিন্তু সে তো মহাকাব্য। কবির কল্পনা।

এযুগের হত্যালীলা আসলে বৃহত্তর এক মনোরঞ্জনের অঙ্গ। প্রাণ হননের জন্য যখন কারণ কিংবা  অকারণের ছদ্ম অছিলাই যথেষ্ঠ। তা না হলে শিকাগোতে উৎসবের জন্য মিলিত হওয়া একদল মানুষের ওপর নির্বিচারে কেন গুলিবর্ষণ করবে অজ্ঞাত আততায়ী? আর কেনই বা সামান্য দশ হাজার টাকার জন্য দিল্লির এক জনবহুল অঞ্চলে নিহত হবে দুই বোন? একই দিনে কয়েক সহস্র মাইল ভৌগলিক ব্যবধানে ঘটে যাওয়া দুটি ঘটনা। কিন্তু কী আশ্চর্য অন্তর্লীন যোগ! মনে কি হয়না ' এ জগৎ মহা হত্যাশালা '! 

পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে উভয় ক্ষেত্রেই এই নিধনযজ্ঞের কোনও জোরালো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। তাহলে? প্রকারান্তরে এ কি আত্মহনন নয়? আমরা কি তবে অতি দ্রুত এগিয়ে চলেছি শেষের সেই দিনের দিকে? প্রফেসর শঙ্কু নিশ্চিহ্নাস্ত্রের পাশাপাশি আবিষ্কার করেছিলেন মিরাকিউরাল বড়ি - যার মধ্যে নিহিত ছিল সকল রোগের নিরাময়। আজকের এই গভীর মানবিক অসুখ সারাবে কোন বিশল্যকরণী?

সুস্থ থাকুন। সৃজনে থাকুন।

শুভেচ্ছা নিরন্তর।


No comments:

Post a Comment