সম্পাদকীয়



অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা;
   জীবনানন্দ দাশ


আশৈশব লালিত সমস্ত নৈতিকতার নিরন্তর ভরাডুবি দেখতে দেখতে মনে হয় পংক্তিগুলি বুঝিবা এই মুহূর্তেই কলম নিঃসৃত। একসময় আমাদের বোঝানো হয়েছিল মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধসম। নিঃসন্দেহে। কিন্তু সেই মগজ ধোলাইয়ের ফল কী হয়েছিল, তা আমরা সবাই জানি। একাধিক প্রজন্মকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল অন্ধকার, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে। তার জের এখনও বহমান। শিক্ষাক্ষেত্রে অভাবনীয় দুর্নীতির ফলে আমাদের অস্তিত্ব যখন বিপন্ন, আরেক তুঘলকি সিদ্ধান্ত স্তম্ভিত করে দিল আমাদের। দাবদাহের কারণে এক সরকারি নির্দেশিকার বলে এক পক্ষকাল বেড়ে গেল বিদ্যালয়গুলির গ্রীষ্মকালীন অবকাশ। এ ও হয়?

কোনও এক সময়ে তিনি বলেছিলেন, তিনি বেতন দেন, তাই বিদ্যালয় পরিচালনার বিষয়ে তিনিই শেষ কথা। তাই? নিশ্চয়ই! না হলে একতরফা সিদ্ধান্তে এমন একটি হিতাহিতবোধরহিত কাজ করা যায়? অনেকে এর পিছনে নানান অভিসন্ধি খুঁজছেন। সে অনুসন্ধানের দায় আমাদের নেই। কিন্তু আমাদের অন্যতর একটা দায়িত্ব থেকে যায়। প্রশ্ন তোলার দায় তথা দায়িত্ব। আমাদের মধ্যে যাদের বয়স অন্তত পঞ্চাশ ছাড়িয়েছে, তাদের মধ্যে কেউ কি মনে করতে পারি গরমের এমন তীব্রতা আগে কখনও দেখা যায়নি? পরিসংখ্যান ও একই কথা বলবে। তাহলে? উত্তরগর্ভ সেই প্রশ্নের উত্তর খোঁজা অথবা অগ্নিপথ বা সৃজিতের ফেলুদার বিশ্লেষণ করা একই রকম নিষ্প্রয়োজন। 

মা বলতেন, কোনও পরিস্থিতিতেই স্নিগ্ধতা হারিয়ে ফেলো না! হায়! সেই স্নিগ্ধতাই আজ হারিয়ে গেছে... জীবনের সর্বক্ষেত্র থেকেই...

তবুও অলীক আশায় বুক বাঁধি...
যে শৈশবের হাতে সমর্পিত আমাদের ভবিষ্যৎ, সেই শিশুদের মঙ্গল হোক!

সতর্ক থাকুন, সৃজনে থাকুন
শুভেচ্ছা অফুরান

No comments:

Post a Comment