সম্পাদকীয়



সম্পাদকীয়


প্রকাশিত হলো ঋতবাক ষষ্ঠ বর্ষ, অষ্টম সংখ্যা।

কোনও রকম ভনিতা না করেই সরাসরি চলে যাই দু'একটা জরুরি কথায়। বিশ্ব জুড়ে করোনা ভাইরাস এই মুহূর্তে একটা বিধ্বংসী মূর্তি ধারণ করেছে, যাকে বলা হচ্ছে অতিমারী। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ট্যুইটার, প্রভৃতি বিভিন্ন স্যোশাল মিডিয়ায় আমরা তথা প্রযুক্তিকে দাসানুদাস বানানো শিক্ষিত মানুষ এই মহাবৈশ্বিক বিপর্যয় নিয়ে যতই 'খিল্লি' করি না কেন, আমি বিশ্বাস করি, প্রাথমিক সাবধানতাগুলো আমরা সকলেই মেনে চলছি। অযথা নিজে আতঙ্কিত হয়ে আতঙ্ক না ছড়িয়ে সাধারণ সাবধানতাগুলো মেনে চললে আপাতত নিজেকে ও নিজের পরিবারকে, একান্ত আত্মজনকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে, এটুকু খেয়াল রাখলেই যথেষ্ট; বিশ্ববাসীর কথা এখনও আর না হয় নাইবা ভাবলেন!

আর সবিনয় অনুরোধ এই যে, সমস্ত কিছুর মধ্যে রাজনীতি খুঁজতে যাবেন না, দয়া করে। অযথা এখনও এখান ওখান ঘুরঘুর না করে কটা দিন না হয় বাড়িতেই রইলেন! এমন কি হয়নি কোনও দিন, যেদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে মনে হয়েছে - উফ্‌, আজ যদি অফিস যেতে না হতো!! তাহলে? 

একটা তথ্য দিই এখানে, এই লেখা যখন লিখছি, অর্থাৎ ২০ মার্চ, ২০২০, আজকের পর বিদেশ থেকে সমস্ত ফ্লাইট আসা সম্ভবত বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। যদি তাই হয়, তাহলে ২১ তারিখের পরে আপাতত আর কোনও বিদেশ থেকে আসা মানুষ ভারতবর্ষে প্রবেশ করতে পারছেন না। পরের দিন সারা দেশে ১৪ ঘন্টার কার্ফ্যু। অর্থাৎ অত্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়ার উপরে সরাসরি সরকারি নিষেধাজ্ঞা।  মনে করা হচ্ছে, এই পদ্ধতি অবলম্বন করার মধ্যে দিয়ে প্রায় লক্ষাধিক সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া রোধ করা যাবে; এটাকে একটা কার্যকরী প্রচেষ্টা বলে স্বাগত জানানোই এই মুহূর্তে বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করছি। 

প্রসঙ্গত, আমার নিজের কথা বলতে পারি। আমার শরীরে করোনা ভাইরাস আছে কি না জানি না। কিন্তু অতি সাবধানতা অবলম্বন করতে গিয়ে আমি পরীক্ষা করাতেও আগেভাগে ততক্ষণ হাসপাতালে দৌড়বো না, যতক্ষণ না আমার শরীরে কোনও উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। কারণটা সহজ। এতে করে, একদিকে যেমন আমার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে আমি নিজেই আক্রান্ত হয়ে পড়তে পারি, সে সম্ভাবনা তো থাকছেই; আবার অন্যদিকে যদি আমার শরীরে আগে থেকেই করোনা ভাইরাস থেকে থাকে, আমার শক্তিশালী প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে যে কিনা নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে, আমার সংস্পর্শে আসা অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিরক্ষাসম্পন্ন কোনও আধার পেলে সে তড়াং করে লাফিয়ে সেখানেও বাসা বাঁধবে। এটাও মোটেই কাম্য নয় কিন্তু!

একটা কথা মনে রাখা দরকার, যুদ্ধে সে-ই জয়ী হয়, সময় মতো যে পিছিয়ে আসতেও জানে। সুতরাং আসুন, এক পা পিছিয়ে দাঁড়াই। আসুন, শৃঙ্খল ছিন্ন করি। মানব সভ্যতার ইতিহাসে এই বোধহয় প্রথমবার। যদিও ফালাফল সেই একই - মানব কল্যাণ!

সচেতন থাকুন, সুস্থ থাকুন

শুভেচ্ছা নিরন্তর 

No comments:

Post a Comment