মুক্তগদ্য
অসমাপ্ত
হিমাদ্রি মুখোপাধ্যায়
এসেছিলে আচম্বিতে। চলেও গেলে নিঃশব্দে; স্তব্ধ আকাশে রঙের বর্ণমালা ছড়িয়ে সূর্য যেমন অস্তদিগন্তে মিলিয়ে যায়।
তখনও সন্ধ্যা নামে নি। আমার বিবর্ণ বীণায় বেজে উঠেছিলো পূরবী-আলাপ। ঝড়ের মতন তুমি এসেছিলে। কেড়ে নিলে বীণা। বললে-"আমি বাজাবো এবার --বিভাস।" অবাক হয়ে বললুম-- "সে কী!সন্ধ্যায় কী বিভাস বাজে কখনও!"
"বাজে না বুঝি!" খিলখিল হেসে তুমি বলেছিলে--"শোনো তবে।"
ঝংকার দিয়ে উঠলো তোমার বীণা। বিভাস তো নয়! দরবারী কানাড়ায় রক্তস্রোত কখন যে উচ্ছলিত হলো তোমার মুখে! অতর্কিতে বীণা সরিয়ে দিলে তুমি। তোমার আরক্ত চুম্বন উদ্ভাসিত পদ্মের মতন নেমে এলো আমার নীরক্ত ওষ্ঠপ্রান্তে।
মুহূর্তে নক্ষত্রপুঞ্জ জ্বলে উঠলো আকাশে। তর্জনীসংকেত করে তুমি বললে- "ওই দেখো আমাকে---আমি ধ্রুবতারা"। প্রতিচুম্বনে প্রত্যুত্তর আর রচনা করা হলো না।
শ্রাবণরজনী ঘন হয়ে আসে আজও। ঝিল্লীঝংকারে প্রতিদিন আমি শুনি--বুঝি এলো, বুঝি এলো...
মালবিকা, একবার, শুধু একবার এসো তুমি, ভাটির পথ বেয়ে অন্তহীন কালস্রোতে। পূর্ণ কর, চরিতার্থ কর একবার অসমাপ্ত চুম্বন তোমার॥
No comments:
Post a Comment